সুকুমার সরকার, ঢাকা: একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে খান সেনার হাতে ধ্বংস হয়েছিল ঢাকার ঐতিহ্যমণ্ডিত রমনা কালী মন্দির। দীর্ঘ পাঁচ দশক পরে আবার পুন:প্রতিষ্ঠিত হল মন্দিরটি। পঞ্চাশ বছরের প্রতীক্ষা শেষে তাই উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী রইলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। হাসিনা সরকারের উদ্যোগে মন্দিরের উদ্বোধন হল রামনাথ কোবিন্দের (Ram Nath Kovind) হাতে।
[আরও পড়ুন: বিজয় দিবসের আনন্দে মাতোয়ারা বাংলাদেশ, কুচকাওয়াজে মঞ্চ ভাগ কোবিন্দ-হাসিনার]
বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বুধবার ঢাকা পৌঁছন কোবিন্দ। তিনদিনের সফরের শেষে শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রমনা কালী মন্দিরের সংস্কার হওয়া অংশের উদ্বোধন করেন তিনি। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী ও কন্যা-সহ মন্দিরে আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। সেখানে তাঁদের অভ্যর্থনা জানান কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। রামনাথ কোবিন্দ ১৫ মিনিট সময় অবস্থানকালে মন্দিরের অংশটি উদ্বোধন করার পাশাপাশি পুজোও দেন। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চে গণহত্যার সময় কামান দেগে মন্দিরটি ধ্বংস করে দিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। সেই অংশটি ভারত সরকারের সাত কোটি টাকা অনুদানে সংস্কার করা হয়েছে। ভক্তনিবাস ও মূল মন্দিরও পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শিরোনামে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানের সম্মানীয় অতিথি হিসেবে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে ‘মুজিব চিরন্তন’ শ্রদ্ধাস্মারক প্রদান করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ভারতের রাষ্ট্রপতির হাতে এই বিশেষ শ্রদ্ধাস্মারক তুলে দেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে রমনা কালী মন্দিরের উদ্বোধন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, বিগত দুর্গাপুজোয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনায় নিন্দার ঝড় বয়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়ে। সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের ঘটনায় ভারতেও বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়। হাসিনা সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানায় নয়াদিল্লি। তদন্তের পর জানা যায়, ওই হামলার নেপথ্যে রয়েছে পাকিস্তানের বড়সড় ষড়যন্ত্র। হিংসার ঘটনায় নাম জড়িয়েছে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পুত্র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে মন্দির উদ্বোধন বড় পদক্ষেপ বলে মত বিশ্লেষকদের।