গোবিন্দ রায়: এ যেন হ-য-ব-র-ল। ব্যাপার খানিকটা এরকম - ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল! ট্রাকচালক হিসেবে টাকা রোজগার করা শুরু। কিন্তু দু, একটি ঘটনাই জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিল। প্রভাবশালীর হাত ধরে ব্যবসায় আসা। তার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। দিন দিন ধনসম্পদের পরিমাণ বাড়তেই থাকে। আর তার হাত ধরেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া। রেশন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বারিক বিশ্বাসের তড়িৎ গতিতে উত্থান ইডি গোয়েন্দাদেরও মাথা ঘুরিয়ে দিচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে রেশন দুর্নীতির তথ্য খুঁজছে ইডি (ED)।
জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বারিক বিশ্বাস।
বসিরহাটের (Basirhat) বাসিন্দা আবদুল বারিক বিশ্বাস। একসময়ে পণ্যবাহী গাড়ি, ট্রাক চালানো ছিল জীবিকা। বিথারি হাকিমপুর এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ, তাঁর হাত ধরেই হাতেখড়ি ব্যবসায় (Business)। তার পর বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান বারিক বিশ্বাস। ধীরে ধীরে ব্যবসায় উন্নতি। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রীদের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু হয়। কিন্তু ২০০০ সালে ব্যবসায়ে লোকসানের মুখে পড়েন রেশন দুর্নীতির (Ration Scam) মূল পাণ্ডা। বাজারে মোটা অঙ্কের টাকা ধার করতে হয়। সমস্যা মেটাতে দুর্নীতির পথ ধরেন বারিক বিশ্বাস।
[আরও পড়ুন: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শ্যালিকার সঙ্গে সহবাস! কাঠগড়ায় CPM নেতা]
২০০৪-০৫ সাল থেকে উত্তর ২৪ পরগনার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিভিন্নভাবে গরু পাচার (Cattle smuggling) শুরু হয়। জানা যায়, এই ব্যবসার মূল কাণ্ডারি ছিলেন এই বারিক বিশ্বাস। ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি তাঁর বাড়িতে কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত নিয়ে সিবিআই (CBI) তল্লাশি চালায়। দুবছর পর, ২০২৩ সালের গোড়ায় রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির (CID) হাতে গ্রেপ্তার হয় বারিক বিশ্বাস। বেশ কয়েক মাস ধরে কখনো জেল হেফাজাত, আবার কখনো পুলিশ হেফাজতে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন তিনি। রেশন দুর্নীতি মামলায় সরাসরি প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyoptipriya Mallick) সঙ্গে সরাসরি যোগ ছিল বারিক বিশ্বাসের, তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি ইডির। মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁর বাড়ি, অফিসে ইডি তল্লাশি শুরু হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের ধারণা, রেশন বণ্টন কেলেঙ্কারিতে আবারও বারিক বিশ্বাসের জেলযাত্রা খুব দূরে নয়।