স্টাফ রিপোর্টার: ডেঙ্গুর মারণ থাবা যেতে না যেতেই এবার আতঙ্ক ‘স্ক্রাব টাইফাস’। উল্টোডাঙার বাসন্তী কলোনিতে দু’জনের মৃত্যুর পাশাপাশি নতুন করে তিনজনের রক্তে মিলল পোকার বিষ। গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত উল্টোডাঙার বাসন্তী কলোনির বাসিন্দারা।
[তৃণমূলের ব্রিগেডে যাচ্ছে না সিপিআই, ফরোয়ার্ড ব্লক]
তবে, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি কলকাতায় এই রোগের প্রকোপ জেলার তুলনায় নগণ্যই বলা চলে। সবথেকে বেশি রোগী এসেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে। তারপরেই উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি ও দুই মেদিনীপুর রয়েছে। বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি জানিয়েছেন, এই রোগের প্রকোপ সাধারণত বর্ষায় দেখা দেয়। খুব বেশি হলে অক্টোবর পর্যন্ত এর প্রকোপ থাকে। কিন্তু এবছর নভেম্বরেও স্ক্রাব টাইফাসের রোগী পেয়েছি। আসলে এই পোকা ধেড়ে ইঁদুর মারফত মানুষের শরীরে ছড়ায়। স্যাঁতসেতে নোংরা ঝোপঝাড় ইঁদুরের খুব পছন্দের। তাই এই জায়গাগুলি নিয়ে সতর্ক হতে হবে। বাড়িতে যাতে কোনওভাবেই ইঁদুর ঢুকতে না পারে। বাড়ির আশপাশে গর্ত থাকলে তা বুজিয়ে ফেলতে হবে।
[সোমেনপুত্র-র হাতেই কি এবার উঠবে যুব কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ? তুঙ্গে জল্পনা]
পুরসভার পতঙ্গ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, মাইট নামে ক্ষুদ্রকায় একটি প্রাণী কামড়ালে ব্যাকটিরিয়াঘটিত এই অসুখ হয়। যার জন্য দায়ী ওরিয়েনসিয়া শুশুগামুসি নামের একটি ব্যাকটিরিয়া। মাইট কোনও পোকা নয়। কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস জানিয়েছেন, আকারে মাইট ০.২ মিলিমিটার থেকে ০.৪ মিলিমিটার মাপের হয়। একমাত্র মাইটের লার্ভা থেকেই এই রোগ ছড়ায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই জ্বরের উপসর্গ প্রায় ডেঙ্গুর মতোই। আক্রান্তের গায়ে লাল চাকা চাকা দাগ বার হয়। অনেকেই প্রাথমিকভাবে একে ডেঙ্গুর সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। ইতিমধ্যেই ভোলা ময়রা আর সখিনা বিবির মৃত্যুতে প্রমাদ গুনছে উত্তর কলকাতার একটি অঞ্চল। এলাকার আরও ন’জন ধুম জ্বরে ভুগছেন। পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক না হলেও কোনওভাবেই স্ক্রাব টাইফাসের সংক্রমণ হাতের বাইরে যেতে দিতে চায় না কলকাতা পুরসভা। কিন্তু কীভাবে ঠেকানো সম্ভব এই অসুখ?
[মদ্যপ তরুণী ফ্যাশন ডিজাইনারের গাড়ির ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যু]
শনিবার এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজনও করা হয়। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে পুর-কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে এই রোগ নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারও শুরু করা হবে। কলকাতার পাকাবাড়িতে মাইটের উপস্থিতির সম্ভাবনা নেই। তবে বাড়ির আশপাশে আর্বজনা থাকলে আশঙ্কা থেকে যায়। পোকার ময়নাতদন্ত করে দেখা গিয়েছে উত্তরবঙ্গের মিরিক এবং সংলগ্ন তরাই অঞ্চলের জঙ্গলে এই ধরনের মাইটের খোঁজ পাওয়া যায়। কোনও বাহকের মাধ্যমেই উল্টোডাঙায় এই রোগ ছড়িয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন পুরসভার বিশেষজ্ঞরা। ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ না থাকলেও স্ক্রাব টাইফাসের ওষুধ রয়েছে। ফলে সঠিক চিকিৎসা হলে জীবনহানির আশঙ্কাও কম। তাছাড়া এই রোগ ছোঁয়াচেও নয়। কিন্তু কলকাতায় হাতেগোনা কয়েকটি ল্যাবরেটরিতে এই রোগ নির্ণয়ের পরিকাঠামো রয়েছে।
The post ইঁদুরই বয়ে নিয়ে আসছে মারণ রোগ, আতঙ্ক বাড়ছে শহরে appeared first on Sangbad Pratidin.