অন্য সেক্টরকে পিছনে ফেলে বাজারে দুর্বার গতিতে এগোচ্ছে রিয়েল এস্টেট স্টক। বিনিয়োগকারীর মনে আবারও জায়গা করে নিচ্ছে একদা পিছিয়ে পড়া এই ক্ষেত্রটি। হালহকিকত জানালেন নীলাঞ্জন দে
হাওয়া ঘুরে গিয়েছে রিয়েল এস্টেট সেক্টর স্টকগুলিতে, ইদানীং ট্রেন্ড দেখে এমনটাই মনে হচ্ছে। ফার্মা, ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএমসিজি-এগুলিকে প্রায় পিছনে ফেলে দ্রুত উঠে আসছে বেশ কিছু রিয়েল এস্টেট কোম্পানির শেয়ার। এবং একাধিক মাপকাঠির বিচারে এই পিছিয়ে থাকা সেগমেন্টটি ফের বিনিয়োগকারীর মনে জায়গা করে নিচ্ছে।
প্রথমে বলা যাক, ফর দ্য রেকর্ড, ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের রিয়েল এস্টেট সূচকটি গত কয়েক মাসে এগিয়েই চলেছে। NSE-র Nifty Realty Index এই এক বছরে ২৫ শতাংশ রিটার্ন দিতে সক্ষম হয়েছে। এর তুলনায় বেশ কিছু অন্য সেক্টরের ইনডেক্সগুলি কিন্তু তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু করে উঠতে পারেনি বলাই চলে।
[আরও পড়ুন: দ্রুত পালটাচ্ছে বিনিয়োগের ধরন-ধারণ, ক্ষুদ্র লগ্নিকারীরা পা ফেলুন মেপে]
এই প্রসঙ্গে দু’টি বিশেষ খবরের শিরোনাম উল্লেখ করা উচিত। এক, এইচডিএফসি (এই মুহূর্তে দেশের অগ্রণী হোম লোন সংস্থা) তার ইতিহাসে সর্বাধিক লোন দেওয়ার নজির গড়েছে। প্রায় দুই লক্ষ কোটির অঙ্কটি বেশ চোখে পড়ার মতোই, বিশেষত কোভিডের অভিঘাতে যেখানে অনেকদিন প্রপার্টি মার্কেটের উপর প্রবল চাপ ছিল।
দুই, আইসিআইসিআই প্রুডেনশিয়াল মিউচুয়াল ফান্ড একটি স্বতন্ত্র ‘হাউজিং অপরচুনিটিস ফান্ড’ নিয়ে এসেছে কেবল রিয়েল এস্টেট এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার সেক্টরে বিনিয়োগ করবে বলে। সংশ্লিষ্ট সেক্টর বলতে এখানে স্টিল, সিমেন্ট, পেইন্টস, গ্লাস, টাইলস ইত্যাদি বলা হচ্ছে।
হোম লোনের পরিসংখ্যনে বৃদ্ধির খবরটি বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। কারণ তার মাধ্যমেই অনেক কিছু বোঝা সম্ভব। হোম লোন বাড়লে ফ্ল্যাট ইত্যাদির বিক্রি বাড়বে, বস্তুত প্রপার্টি মার্কেটে গতি এসেছে বলেই সাধারণ মানুষ ঋণ নিয়ে কিনতে চান, বাসস্থানের জন্য তো বটেই, ইনভেস্টমেন্ট করে ধরে (অর্থাৎ হোল্ড করে) রেখে দেবেন বলেও। এইচডিএফসির মতে বেশ কিছু কারণে লোনের বহর আগামিতে বাড়বে। ‘লো কস্ট’ হাউজিং সেগমেন্ট ছাড়াও তুলনায় ছোট শহরে (টিয়ার টু ও টিয়ার থ্রি) ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, তাই রিয়েল এস্টেট বাজারও বেশ সচল। আইসিআইসিআই প্রুডেনশিয়াল মিউচুয়াল ফান্ডের অভিমত-এর ফলে লাভবান হবে একাধিক ব্যবসা। তাই বৃদ্ধি পেতে পারে পেইন্টস বা সিমেন্ট কোম্পানির শেয়ারের দামও। অবশ্য কোনওভাবেই কিছু গ্যারান্টি দেওয়া সম্ভব নয়-বাজারে তাই ভোলাটিলিটি বজায় থাকবে এবং লগ্নিকারীর পোর্টফোলিওর ভ্যালুয়েশনও বাড়বে ও কমবে তাল মিলিয়ে। অনিশ্চয়তা থেকেই যাবে, তবে তারই মধ্যে ভাল শেয়ার কিনলে উপকৃত হবেন সাধারণ বিনিয়োগকারী।
নিচের তালিকায় আমরা পক্ষপাত ছাড়াই পাঁচটি স্টক নির্বাচন করলাম। লগ্নিকারীরা যেন অবশ্যই ভাল করে সমস্ত কিছু বুঝে নেন। ঝুঁকির ব্যাপারেও সতর্ক থাকেন। প্রয়োজনে নিজেদের ব্রোকারের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।
এগুলি সব কটিই মোটামুটি চালু স্টক। অর্থাৎ প্রতিটির লিকুইডিটির পরিস্থিতি নিয়ে তেমন চিন্তা নেই। তা সত্ত্বেও মনে রাখুন, অতীতের পারফরম্যান্সই শেষ কথা নয়। আগামিদিনে স্টকের রিটার্ন সম্পূর্ণভাবে অন্যরকম হতে পারে।