সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাপমাত্রা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। সঙ্গে আর্দ্রতার দাপট। সবমিলিয়ে ত্রাহি ত্রাহি রব। স্কুলে স্কুলে পড়ে গিয়েছে গ্রীষ্মের ছুটি। তা বলে তো আর বাবা-মায়ের অফিস ছুটি নয়। তার ফলে বাড়িতে দিনরাত একা খুদে। শিশুদের একাকিত্ব কাটাতে অনেক অভিভাবকই পাঠাচ্ছেন সামার ক্যাম্পে। কলকাতা শহরজুড়ে যত দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে সামার ক্যাম্পের সংখ্যা।
আদতে সামার ক্যাম্প পশ্চিমী দেশের ধারা। সাধারণত শীতপ্রধান দেশে গরমকে উপভোগ করার জন্য সামার ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়। আমাদের দেশে অবশ্য বেশিরভাগ দিনই গরম। আর এই গরমে স্কুলও ছুটি থাকে কমপক্ষে টানা মাসখানেক। সেকথা মাথায় রেখে এপ্রিল-মে মাসেই সামার ক্যাম্পের আয়োজন। এই ধরনের ক্যাম্পে খেলাধূলা, ছবি আঁকার পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত থাকে। তেমনই আবার কোথাও শেখানো হয় সাঁতার, কোথাও হাতের কাজ। আবার কোথাও আগুন ছাড়া অল্পস্বল্প রান্নাবান্নাও শেখানো হয়। খুদের কাছে সামার ক্যাম্প খুবই আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
সামার ক্যাম্পে পাঠাতে খরচ খুব বেশি নয়। প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ খরচ হাজার দুয়েক টাকা। তাই ভিড়ও হচ্ছে বেশ। কিন্তু সামার ক্যাম্পের প্রতি এত ঝোঁক বাড়ছে কেন অভিভাবকদের? অনেকের মতে, বর্তমানে বেশিরভাগ বাবা-মা কর্মরত। বাড়িতে খুদেকে দেখার মতো কেউ নেই। গ্রীষ্মের ছুটিতে অনেক সময় ক্রেশও বন্ধ থাকে। তাই বাধ্য হয়ে শিশুকে কোথাও ব্যস্ত রাখতে সামার ক্যাম্পের উপর ভরসা রাখছেন অভিভাবকরা।
সামার ক্যাম্পে পাঠানোর আগে অবশ্য বেশ কয়েকটি বিষয় অভিভাবকদের মাথায় রাখা প্রয়োজন। সেগুলি হল:
* যে সামার ক্যাম্পে পাঠাচ্ছেন, সেটি সম্পর্কে না জেনে রেজিস্ট্রেশন করবেন না।
* ভালো করে খোঁজখবর নিন। দেখুন এই পরিবেশে আপনার খুদেকে রাখা সম্ভব কিনা। ভাবনাচিন্তা করে তবে রেজিস্ট্রেশন করান।
* সামার ক্যাম্পে পাঠানোর সময় শিশুর সঙ্গে কোন কোন জিনিস দিতে হবে, তার একটি তালিকা তৈরি করুন।
* এবার সেই তালিকা অনুযায়ী জিনিসপত্র শিশুর সঙ্গে থাকা ব্যাগে দিয়ে দিন। প্রতিটি জিনিসে নাম লিখে দিতে ভুলবেন না।
* খুদে কাদের সঙ্গে মিশছে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। নইলে সামার ক্যাম্পে পাঠানোর পর বদভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে পড়তে পারে আপনার সন্তান।
* খুদে সামার ক্যাম্পে গিয়ে আদৌ উপভোগ করতে পারছে কিনা, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
খুদেকে এই ধরনের ক্যাম্পে পাঠানোর সুফল রয়েছে অনেক। যেমন - শিশু একে অপরের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করতে শেখে। আবার খেলাধূলো করে তাদের একাকিত্ব কাটে। তবে অনেক শিশু সহজভাবে সকলের সঙ্গে মিশতে পারে না। সেক্ষেত্রে খুদের ভালো না লাগলে জোর করে পাঠাবেন না।
