সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইন্টারনেটের যুগে এক ক্লিকেই মিলছে প্রায় সব কিছুই। এবার সেই তালিকায় জুড়তে চলেছে মাহেশের জগন্নাথদেবের রথযাত্রাও (Mahesh Rath Yatra)। পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকে অনলাইনে দেওয়া যাবে পুজো। পাওয়া যাবে ভোগও।
রথযাত্রা নিয়ে দিনকয়েক আগে মাহেশ জগন্নাথ ট্রাস্টি বোর্ডের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠক করে রথযাত্রার নির্ঘন্ট জানানো হয়। করোনার জেরে দু’বছর মাহেশের রথে ভক্তরা অংশ নিতে পারেননি। তবে এবার অনেক বেশি সংখ্যক ভক্ত রথযাত্রায় অংশ নেবেন বলেই আশা মাহেশ জগন্নাথ ট্রাস্টি বোর্ডের। তবে যাঁরা সশরীরে মাহেশের রথযাত্রায় অংশ নিতে পারবেন না, তাঁদের জন্য রয়েছে ব্যবস্থা। এবার পৃথিবীর যেকোনও প্রান্ত থেকে অনলাইনে দেওয়া যাবে পুজো। পাওয়া যাবে ভোগও।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলায় মাথা নিচু করে বাস করছি’, বিস্ফোরক রাজ্যপাল, পালটা জবাব কুণালের]
আজ থেকে প্রায় ছয় শতক বছর আগে সাধক ধ্রুবানন্দ পুরীধামে যান তাঁর আরাধ্য দেবতা জগন্নাথদেবকে নিজে হাতে ভোগ নিবেদন করবেন বলে। সেখানে পাণ্ডাদের কাছে অপমানিতহয়ে ফিরে আসেন মাহেশে। স্বপ্নে দেখা দিলেন জগন্নাথদেব। আরাধ্য দেবতার স্বাপ্নাদেশে মাহেশে গঙ্গার ধারে এক কুটিরে জগন্নাথদেবের মূর্তি তৈরি করে শুরু করলেন সাধনা। নিজে ভোগ নিবেদন করেন জগন্নাথদেবকে। নীলাচলে যাওয়ার পথে একদিন চৈতন্যদেব মাহেশে ধ্রুবানন্দের কুটিরে এসে হাজির হন। ধ্রুবানন্দ তখন অন্তিম শয়নে। ধ্রুবানন্দের কাতর অনুরোধে চৈতন্যদেব দ্বাদশ গোপালের পঞ্চম গোপাল কমলাকর পিপলাইকে এই মন্দির সেবার দায়িত্ব দিলেন। কমলাকর পিপলাই মাহেশেই থেকে গেলেন। বংশানুক্রমে তাঁর উত্তরাধিকারীরা আজও মন্দিরের সেবাইত। এই কমলাকর পিপিলাই-ই পুরীর রথযাত্রার সমারোহ দেখে এসে মাহেশে রথযাত্রার প্রবর্তন করেন।
পুরীর পর এটিই দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা। তাই পুরীকে বলা হয় নীলাচল আর মাহেশকে নবনীলাচল। সেই থেকে আজও সমান উদ্দীপনার সঙ্গে রথযাত্রা আর রথের মেলা হয়ে চলেছে মাহেশে। রথযাত্রার দিন লক্ষ ভক্তের টানে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা জিটি রোড ধরে চলেন শ্রীরামপুরের গুন্ডিচাবাড়িতে। আটদিন ধরে সেখানেই চলে পুজোপাঠ ও ভোগ নিবেদন। প্রতিদিন প্রভুকে খিচুড়ি, নানারকম ভাজা, সাদা অন্ন, ডাল তরকারি, চাটনি, পায়েসের বোগ দেওয়া হয়। আর থাকে প্রভুর প্রিয় মালপোয়া। সন্ধের ভোগে থাকে লুচি, হালুয়া।