সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী রবি ও সোমবার বাগদেবীর আরাধনায় মাতবে গোটা বাংলা। ওই একটামাত্র দিন পড়া থেকে ছুটি। দেদার মজা করে পড়ুয়ারা৷ হলুদ শাড়ি আর পাঞ্জাবি গায়ে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ানোর দিন। প্রায় প্রত্যেক বাঙালির বাড়িতেই সরস্বতী পুজো হয়। সরস্বতী পুজোর পরেরদিন শীতল ষষ্ঠী। বাড়ির মেয়েরা ব্রত পালন করেন। ওইদিন দিনভর বাড়িতে বন্ধ থাকে রান্নাবান্না। আগের রাতে রান্না করা গোটা সেদ্ধ খান তাঁরা। কিন্তু কেন যুগের পর যুগ ধরে সরস্বতী পুজোর পরেরদিন পালন করা হয় শীতল ষষ্ঠী? কেনই বা গোটা সেদ্ধ খান অনেকে?

সরস্বতী পুজোর দিন সকালে বাজারের ব্যাগ হাতে বেরিয়ে পড়েন গৃহস্থরা। চড়া দাম হলেও বাজার থেকে বাছাই করে গোটা সেদ্ধর সামগ্রী হিসাবে শিষ পালং, গোটা মুগ, গোটা বেগুন, গোটা শিম, গোটা কড়াইশুটি, টোপা কুল, সজনে ফুল কিনে আনেন তাঁরা।
পুজো মিটে গেলে বিকেলের দিকে পরিষ্কার হাঁড়িতে শুরু হয় গোটা রান্না। কোনও সবজি না কেটেই হাঁড়িতে দিতে হয়, তাই তা গোটা সেদ্ধ নামেই পরিচিত। সেদ্ধ হয়ে গেলেই গোটা রান্না শেষ। কেউ কেউ গোটা রান্নায় মশলা দেন। আবার কেউ কেউ মশলা ছাড়াই গোটা রান্না করেন। সরস্বতী পুজোর পরেরদিন সকালে ষষ্ঠী তিথিতে হয় ষষ্ঠী পুজো। তারপর ফুল, প্রসাদ দিয়ে বাড়ির শীল, নোড়ার পুজো হয়। পুজোর সময় দইয়ের ফোঁটা দেওয়া হয় শীল-নোড়ার গায়ে। পুজো শেষে সেই দইই আগের দিনের রান্না করা খাবারে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। এদিন কিন্তু সকাল থেকে বাড়িতে আগুন জ্বালানো হয় না। অনেকটা অরন্ধনের মতো এই পার্বণ নিয়ে সরস্বতী পুজোর পরদিন বেশ একটা অন্য আবহ তৈরি হয়।
শীত বিদায় নিচ্ছে। আসছে বসন্ত। এই সময়ে শরীরের পক্ষেও গোটা সেদ্ধ খাওয়া খুবই ভালো। কারণ, সবজিতে থাকা পুষ্টি জীবাণুদের সঙ্গে মোকাবিলা করে। তাই সরস্বতী পুজোর পরেরদিন গোটা সেদ্ধ খাওয়ার রীতি আজও প্রচলিত। যদিও কাজের চাপে অনেক বাড়িতেই এখন এই রীতিতে ছেদ পড়েছে। তবে হলফ করে বলা যায়, বাড়ির মা-ঠাকুমাদের হাতে তৈরি গোটা সেদ্ধ একবার খেলে, সেই স্বাদ আপনি জীবনেও ভুলতে পারবেন না৷