সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত নভেম্বরে ঘুষকাণ্ডে নাম জড়ায় আদানি গোষ্ঠীর। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় গৌতম আদানি ও তাঁর ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধে। যদিও যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন 'মোদি ঘনিষ্ঠ' এই ধনকুবের শিল্পপতি। এর পরেও বুধবার উদ্বেগ বাড়ল। আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্তে সরাসরি ভারত সরকারের সাহায্য় চাইল আমেরিকার শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউএস সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)।
বুধবার আদানি ঘুষকাণ্ডের শুনানি হয় নিউ ইয়র্কের আদালতে। তখনই এসইসি জানায়, অভিযুক্ত শিল্পপতি গৌতম আদানি, তাঁর ভাইপো সাগর আদানি যেহেতু ভারতের বাসিন্দা, সেই কারণেই তাঁকে অভিযোগের নোটিস পাঠানোর জন্য ভারতের আইন মন্ত্রকের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, ভারত সরকার মারফত শিল্পপতিকে নোটিস পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে। উল্লেখ্য, 'হ্যাগ সার্ভিস কনভেনশন' একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। যার মাধ্যমে এক দেশ থেকে অন্য দেশে, ব্যবসা সংক্রান্ত আইনি নোটিস পাঠানো যায়।
এদিকে আদানির ঘুষকাণ্ডে মার্কিন শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা মোদি সরকারের সাহায্য চেয়েছে, একথা প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ মন্তব্য করেছেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগকে ব্যক্তিগত বিষয় বলেছিলেন। এখন কি তিনি এসইসি-কে সাহায্য করে বাধিত করবেন?"
প্রসঙ্গত, গত নভেম্বর মাসে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠে। গৌতম, তাঁর ভাইপো সাগর এবং তাঁদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, প্রায় ২,২৩৭ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাজারের থেকে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত আদায় করেছিল। ওই প্রকল্প থেকে ২০ বছর ধরে প্রায় ১৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা মুনাফা করার পরিকল্পনা ছিল শিল্পগোষ্ঠীর। প্রকল্পের জন্য আদানি গ্রিন সংস্থা ঋণপত্রের (বন্ড) মাধ্যমে লগ্নিকারীদের থেকে প্রায় ৬৩৩৮ কোটি টাকা তুলেছিল বলেও অভিযোগ।
এর মধ্যে আমেরিকার লগ্নিকারীদের থেকে ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার তোলা হয়েছিল বলেও দাবি করা হয়। আমেরিকার শেয়ার বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করলে আদানি গোষ্ঠীকে সে দেশের সমস্ত আইন মেনে চলতে হবে। সেই কারণেই আমেরিকার শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ন্যায়বিচার দপ্তর ব্যবস্থা নেয় আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা দায়ের হয় আমেরিকার আদালতে।
