সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। অন্যদিকে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠে কাশফুলের ঢেউ। ভোরবেলা মাটির উঠোনে শিউলি ফুল। আর সেই শিউলির বোঁটায় যেন ফুটে উঠছে মায়ের গায়ের রং। বোঝা যাচ্ছে শরৎ এল। এবার মা আসবেন। কয়েকদিনের জন্য ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভরা সংসারে মর্ত্যে শুভাগমন ঘটবে উমার। আর দেবীর আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই ফিরে ফিরে আসে মহিষাসুরের স্বর্গ দখলের আখ্যান। কিন্তু জানেন কি দেবী দুর্গার প্রথম পুজো করেছিলেন রাজা সুরথ! পুরাণ অনুসারে রাজা সুরথই নাকি পৃথিবীতে প্রথম দেবী দুর্গার পুজো করেন। রয়েছে পৃথক এক আখ্যানও। কী সেই কাহিনি? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
রাজা সুরথ ছিলেন চন্দ্রবংশীয় সুশাসক। জানা যায়, কোনও এক যুদ্ধে তিনি শত্রুদের কাছে পরাজিত হন। বনবাসে গিয়ে রাজা তপোবনে মেধা ঋষির আশ্রমে এসে ওঠেন। ওদিকে রাজার অনুপস্থিতিতে তাঁরই অমাত্যরা রাজ্য দখল করে। ক্রমে আশ্রমের জীবনযাপন রাজার মন থেকে কাম, ক্রোধ, লোভ, মদ, মোহ এবং মাৎসর্যের বিলোপ ঘটায়। সংসারের কোনও খেয়ালই আর তাঁর মনে স্থান পায় না। এমনকী তিনি নিজের হৃত রাজ্য নিয়েও ভাবনাচিন্তা ত্যাগ করেন।
ঠিক এমন সময় সমাধি নামক এক বৈশ্যের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। তাঁর সঙ্গে কথা বলে রাজা জানতে পারেন, স্ত্রী-পুত্র-সহ তাঁর পরিবার বৈশ্যের সঙ্গে প্রতারণা করে সর্বস্ব হরণ করেছে। কিন্তু দু'জনেই নিজ নিজ পরিবারের শুভাশুভ নিয়ে উৎকণ্ঠিত। মনে প্রশ্ন জাগল, যাঁরা তাঁদের দু'জনকেই প্রতারণা করে পথে বসিয়েছে, তাদের প্রতি সামান্য ক্রোধ না জেগে হঠাৎ কেন অনুকম্পা তৈরি হচ্ছে হৃদয়ে?
দু'জনেই একসঙ্গে মেধা ঋষির শরণাপন্ন হলেন। ঋষি তখন চণ্ডীর দেবীমাহাত্ম্যের কাহিনি তুলে ধরেন। ঋষির কথা শুনে রাজা ও তাঁর সঙ্গী নদীর তীরে তিন বছর ধরে কঠোর তপস্যায় মগ্ন রইলেন। তপস্যা শেষে রাজা সুরথ দুর্গোৎসব করেন। তবে এ পুজো (Durga Puja 2025) হয়েছিল বসন্তকালে। এখনকার মতো শরৎকালে নয়। দেবীর বরে অবশেষে রাজা সুরথ হারানো রাজ্য ফিরে পেলেন। আর সমাধি বৈশ্য লাভ করেন তত্ত্বজ্ঞান।
