সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভগবান বিষ্ণুর অষ্টম অবতার শ্রীকৃষ্ণ। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্রে জন্ম হয়েছিল ভগবান কৃষ্ণের। আর সেই হিসেবেই দিনটি পালিত হয় কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী হিসেবে। বলা হয় গভীর রাতে চারপাশ যখন নিশুতি, তখনই আরাধনা করা হয় বাল গোপালের। আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কেন জন্মাষ্টমী মধ্যরাতে পালিত হয়? এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু লুকিয়ে রয়েছে হিন্দু পুরাণ শাস্ত্রে।
ভগবৎ পুরাণ অনুসারে, রোহিণী নক্ষত্র যোগে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয় ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষে। কৃষ্ণের বাবা বাসুদেব এবং মা দেবকী। তিনি মথুরায় মামা কংসের কারাগারে জন্মগ্রহণ করেন। দৈববাণী ছিল বাসুদেব ও দেবকীর অষ্টম সন্তানের হাতেই অত্যাচারী কংসের মৃত্যু হবে। আর একথা জানার পরই কংস কারাবন্দি করে রাখেন কৃষ্ণের বাবা-মাকে। দেবকীর গর্ভজাত ছ'টি সন্তানকে বধ করেন কংস। সপ্তম পুত্র বলরাম গর্ভে এলে বাসুদেবের অপর স্ত্রী রোহিণীর গর্ভে তাকে স্থানান্তরিত করা হয়। আর অষ্টম গর্ভের সন্তান কৃষ্ণের জন্ম হয় কারাগারেই। মধ্যরাতে কৃষ্ণের জন্মের পর দৈব প্রভাবে কারাগারের রক্ষীরা সকলে ঘুমিয়ে পড়ে। আর এই সুযোগে কৃষ্ণকে ঝুড়ির মধ্যে নিয়ে যমুনা পেরোন বাসুদেব। রেখে আসেন বৃন্দাবনে নন্দ ও যশোদার কাছে।
কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালন করা হয় মধ্যরাতে। হিন্দু ধর্ম অনুসারে, মধ্যরাত্রি হল এমন এক সময় যা ভোরের আলো নিয়ে হাজির হয়। অন্ধকার পেরিয়ে নতুন আলোর সন্ধান দেয়। কংসের অত্যাচারের অন্ধকার সময়কে শেষ করার জন্যই শ্রীকৃষ্ণের আগমণ। সমস্ত অন্ধকার দূর হয়ে নতুন আলো ফোটানোর ইঙ্গিত বহন করে এই কাহিনি। আর এজন্যই জন্মাষ্টমীর পুজো মাঝরাতে করার রীতি প্রচলিত।
২০২৫ সালের জন্মাষ্টমী পড়েছে ১৫ আগস্ট, শুক্রবার রাত ১১টা ৫১ মিনিটে। অষ্টমী থাকবে ১৬ আগস্ট, শনিবার রাত ৯টা ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর শুভ মুহূর্ত ১৬ আগস্ট রাত্রি ১২টা ৪ মিনিট থেকে রাত ১২টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে গোপালের পুজো করলে শ্রীকৃষ্ণের কৃপা পাওয়া যাবে।
