shono
Advertisement
Kali Puja 2025

'কালীযন্ত্র' ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ? মূর্তি পুজোর আগে এভাবেই মায়ের আরাধনায় বসতেন সাধকরা

কী এই কালীযন্ত্র?
Published By: Buddhadeb HalderPosted: 07:44 PM Oct 15, 2025Updated: 07:44 PM Oct 15, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাতে গোনা আর কয়েকদিন পর কালীপুজো। প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে দেবীর মূর্তি পূজিত হবে। গলায় নরমুণ্ডের মালা পরিহিতা দেবী কোথাও কৃষ্ণ বর্ণের, আবার কোথাও বা নীল। তিনি ভয়ংকর। উন্মুক্ত জিহ্বা, হাতে খড়্গ। দেবী কালীর বহু রূপভেদ বিদ্যমান। তবে, সকল রূপেই তিনি বীভৎস।

Advertisement

দেবী কালিকা হরপ্পা সভ্যতা থেকেই পূজিত হয়ে আসছেন। যদিও আগে তিনি যন্ত্রে পূজিত হতেন। যখন দেবীর মূর্তি কল্পিত হয়নি তখন এই যন্ত্রেই দেবীকে পূজা করা হত। আজ আমরা মায়ের যে মূর্তি দেখি, ষোড়শ শতাব্দীর আগে কিন্তু এই মূর্তি ছিল না। সর্বপ্রথম কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ মা কালীর এই সর্বপরিচিত মূর্তিরূপের প্রকাশ ঘটান। তার আগে মূলত যন্ত্রেই মায়ের পুজো হত। সেনযুগের বৃহদ্ধর্ম পুরাণে আমরা কালীর বর্তমান মূর্তিরূপ পাই। এর প্রায় তিন-চারশো বছর পরে আগমবাগীশ মা কালীর সেই রূপ পুনরুদ্ধার করেন।

কালীপুজোয় আজ মায়ের মূর্তি থাকলেও পুজোর সময় তাম্রপাত্রে সিঁদুর লেপে বেলপাতার ডাঁটি সাজিয়ে তার ওপর যন্ত্র আঁকা হয়। আসলে 'যন্ত্র' হল দেবীর নগরী। শক্তি যন্ত্র অনুসারে বাইরের অংশটিকে বলা হয় 'দ্বার'। তারপরের অংশটির নাম 'ভপুর'। এরপরে রয়েছে 'দল'। একদম ভেতরের যে গোল অংশটি, যেটি যন্ত্রের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু, সেটির নাম 'কর্ণিকা'। এরই মধ্যে মধ্যবিন্দুতে দেব বা দেবীর অবস্থান হয়।

আগে সাধকরা নরকপালে নররক্ত দিয়ে কিংবা তামার পাত্রে খোদাই করে কালী যন্ত্র অঙ্কন করতেন। কালী যন্ত্রের অধিষ্ঠাত্রী দেবী হলেন ১৫ জন মহাযোগিনী (কালী, কপালিনী, কুল্লা, কুরুকুল্লা, বিরোধিনী, বৈপ্রচিত্তা, উগ্রা, উগ্রপ্রভা, দীপ্তা, নীলা, ঘনা, মাত্রা, বলাকা, মুদ্রা, মিতা)। এই মহাযোগিনীগণ প্রত্যেকে খড়্গহস্তা, প্রত্যেকের গলায় নরমুণ্ডমালা শোভিতা এবং প্রত্যেকে শবাসনা-মৃত শরীরের উপর উপবিষ্টা। এঁরা প্রত্যেকে কালীর উপদেবী মহাযোগিনী এবং এঁরা মহা ভয়ংকরী। এছাড়াও দেবীর সঙ্গে বিভিন্ন প্রেত, ভৈরব, বটুক, ক্ষেত্রপালেরা অবস্থান করেন। এঁরা প্রত্যেকেই দেবীর পরিবারের সদস্য। দেবী কালী এই ১৫ জন উপদেবীগণ দ্বারা পরিবেষ্টিতা হয়ে যন্ত্রের মূল মধ্যবিন্দুতে অবস্থান করেন।

বাংলা ও বাংলার বাইরে বিভিন্ন প্রদেশে দেবী কালিকার পূজা হয় বিভিন্ন রূপে ও নামে। তাঁর পুজো যে নামেই হোক না কেন, তিনি সর্বদাই অতীব ভয়ংকরী ও বিভীষিকাময়ী। দেবী সর্বত্রই ধ্বংস বা প্রলয়ের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা। তাঁর মূর্তি গড়া হয় মাটি, পাথর কিংবা ধাতু দিয়ে। নিত্যপূজার জন্য দেবী স্থাপিত হন মন্দিরে। কুলপূজা ও মানত পূজায় অধিষ্ঠান করেন বৃক্ষতলে, নাটমন্দিরে বা সাময়িক পটাবাসে। তবে সকল পুজোতেই এই 'যন্ত্র' আবশ্যিক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • যখন দেবীর মূর্তি কল্পিত হয়নি তখন এই যন্ত্রেই দেবীকে পূজা করা হত।
  • সর্বপ্রথম কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ মা কালীর এই সর্বপরিচিত মূর্তিরূপের প্রকাশ ঘটান।
  • কালীপুজোয় আজ মায়ের মূর্তি থাকলেও পুজোর সময় তাম্রপাত্রে সিঁদুর লেপে বেলপাতার ডাঁটি সাজিয়ে তার ওপর যন্ত্র আঁকা হয়।
Advertisement