সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা শহরের প্রাচীন দুর্গাপুজোগুলির মধ্যে বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের পুজো অন্যতম। চারশো বছরেরও প্রাচীন এই দুর্গাপুজো। কলকাতার ইতিহাস ফিরে দেখলে জানা যাবে ১৬১০ সাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে। এমনকী বাবু সংস্কৃতিতে জাঁকজমকপূর্ণ দুর্গাপুজোর তখনও সূচনা হয়নি। সাবর্ণ রায়চৌধুরীর বাড়ির পুজো এরও প্রায় একশো বছর আগের। সাবর্ণদের আটটি বাড়িতে দেবীর আরাধনা চলে চারদিন। কলকাতার থিম পুজোর কলেরবে এখনও মাথা উঁচিয়ে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী বনেদিবাড়ির এই পুজো।
সাবর্ণদের পরিবারে বর্তমানে ৮টি পুজো হয়। বড়িশার ছ'টি বাড়ি তথা উত্তর চব্বিশ পরগনা ও নিমতার বাড়িতে এই পুজোর চল রয়েছে এখনও। এই প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে অন্নভোগের নিয়ম। এমনকী আটটি বাড়ির মধ্যে সাতটি বাড়িতেই দেবীকে নিবেদন করা হয় আমিষ ভোগ। তবে, সন্ধিপুজোর সময় থাকে মায়ের জন্য বিশেষ ভোগ।
দুর্গাপুজোর অবিচ্ছেদ্য নিয়ম হল সন্ধিপুজো। মহাষ্টমী ও মহানবমীর সন্ধিক্ষণে এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। এজন্য একে ‘সন্ধিপূজা’ বলা হয়। দেবী দুর্গার বদলে এই সময় পূজিতা হন তাঁরই উগ্র ও ভয়াল এক রূপ। অষ্টমাতৃকার অন্যতম শক্তি হিসেবে এখানে দেবীর উগ্র ভয়ংকর রূপ চামুণ্ডাকে পুজো করা হয়। এই সময় দেবীকে ১০৮টি পদ্ম ও ১০৮টি প্রদীপ অর্পণ করা হয়। বলা হয় মহাষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট এবং মহানবমীর প্রথম ২৪ মিনিট, মোট ৪৮ মিনিট ধরে চলে দেবী আরাধনা। তবে ১০৮টি প্রদীপ ও পদ্মের মতো এখানে দেওয়া হয় একটি পোড়া ল্যাটা মাছ।
সন্ধিপুজোর সময় নিয়ম মেনে মায়ের ভোগ রান্না হয়। সন্ধিপুজোর শুরুর মুহূর্তে একটি শুকনো তালপাতা ও নারকেল পাতার আগুনে রান্না করা হয় খিচুড়ি। মায়ের এই ভোগ রাঁধা হয় একটি বড় সরায়। আর খিচুড়ি হয়ে গেলে সেই আঁচেই পোড়ানো হয় ল্যাটা মাছ। সন্ধিপুজোয় এই খিচুড়ি আর ল্যাটা মাছই দেবীকে নৈবেদ্য হিসেবে অর্পণ করা হয়।
তবে, দেবী আরাধনায় ভোগের খিচুড়ি যেকোনও চালে রাঁধা যায় না। অখণ্ড ও সম্পূর্ণ চাল দিয়ে মা-কে খিচুড়ি রান্না করে দিতে হয়। বিশুদ্ধ চালে রান্না করতে হয় মায়ের অন্নভোগ। আর যেমন খুশি চাল দিয়ে এ ভোগ রাঁধা যায় না। তাই পছন্দের তালিকায় অবশ্যই রাখুন লালবাবা রাইস। এই চালের অখণ্ড ও বিশুদ্ধ রূপ দেবী আরাধনায় পৃথক মাত্রা তৈরি করবে। লালবাবা আয়োজনে ও উৎসবে ব্যতিক্রমী এক নাম।
