shono
Advertisement
Lovely Khatun

'বাংলাদেশি' বিতর্ক, মালদহে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে লাভলিকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু

ভুয়ো ওবিসি শংসাপত্রের জেরে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হতে পারে এফআইআর।
Published By: Amit Kumar DasPosted: 07:56 PM Feb 09, 2025Updated: 07:56 PM Feb 09, 2025

বাবুল হক, মালদহ: বাংলাদেশের নাগরিক তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান! এমনই অভিযোগ উঠেছিল রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লাভলি খাতুনের বিরুদ্ধে। দু'সপ্তাহ আগে লাভলির ওবিসি সার্টিফিকেট জাল বলে জানিয়েছিল মহকুমা প্রশাসন। এবার লাভলির প্রধানপদ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করলেন উত্তর মালদহের চাঁচোলের মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

বাংলাদেশে অশান্তির আবহের মধ্যেই শিরোনামে উঠে এসেছিলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লাভলি খাতুনের নাম। তিনি নাকি বাংলাদেশের নাগরিক! অভিযোগ, ওপার থেকে এপারে ঢুকে জাল নথির ভিত্তিতে ভোটে দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। আর এতেই শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। হাইকোর্টের নির্দেশে শুনানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন চাঁচোলের মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায়। দু'দফা শুনানি হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে তাঁর ভুয়া জাতিগত শংসাপত্র বাতিল করে দেন মহকুমা শাসক। শুধু তা-ই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে জাল শংসাপত্র তৈরির অভিযোগে পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছে প্রশাসনের একটি সূত্র। এবার যেতে পারে তাঁর প্রধানপদও।

জানা গিয়েছে, লাভলি খাতুন ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে কংগ্রেসের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেন। পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগদান করে প্রধান পদে বসেন তিনি। প্রধান পদটি ছিল ওবিসি মহিলা সংরক্ষিত। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলের হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে যিনি পরাজিত হন সেই রাহেনা সুলতানা-সহ আরও চারজন প্রশাসনের কাছে লাভলির জাল শংসাপত্রের বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। হাইকোর্টেও মামলা করেন তাঁরা। বাংলাদেশি হওয়া সত্ত্বেও ভুয়া সার্টিফিকেট বানিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছেন ওই মহিলা বলে অভিযোগ।

অভিযোগকারীদের দাবি, লাভলির আসল নাম 'নাসিয়া শেখ'। বাড়ি বাংলাদেশে। পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধভাবে তিনি ভারতে ঢোকেন। তারপর নিজের পূর্ব পরিচয় সবটাই নষ্ট করে ফেলেন। বাবার নামও নাকি বদলে ফেলেন তিনি। ২০১৫ সালে ভারতে তাঁর ভোটার কার্ড ইস্যু হয়। ২০১৮ সালে ইস্যু হয় জন্ম সার্টিফিকেট। সেই নথিতে নাসিয়ার বাবার নাম ছিল শেখ মুস্তাফা। কিন্তু অভিযোগ, লাভলির বাবার নাম শেখ মুস্তাফা নয়। আসল নাম জামিল বিশ্বাস। এমনকি ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রারেও শেখ মুস্তাফার পরিবারে লাভলির কোনও অস্তিত্ব নেই। শেখ মুস্তাফাকে মিথ্যা বাবা সাজিয়ে সরকারি নথিপত্র তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওবিসি সার্টিফিকেটটা যে জাল, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ হয়েছে মহকুমা শাসকের শুনানিতে। লাভলির ওসিবি সার্টিফিকেট বাতিলের পর পঞ্চায়েত প্রধানের পদও খোয়াতে চলেছেন তিনি।

জালিয়াতির অভিযোগে আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হতে চলেছে বলে দাবি প্রশাসনের। মালদহ জেলা পরিষদের সদস্যা তথা তৃণমূলের ওই ব্লকের সভাপতি মর্জিনা খাতুনের দাবি, ইতিমধ্যেই লাভলির ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিয়েছে মহকুমা প্রশাসন। প্রধান পদটি ওবিসি সংরক্ষিত ছিল। ফলে সার্টিফিকেট বাতিল হওয়ায় লাভলির প্রধানপদও খারিজ হয়ে যাবে। মর্জিনা খাতুনের দাবি, বর্তমানে যিনি উপপ্রধানের পদে রয়েছেন তিনিই হতে পারেন প্রধান। এতে তৃণমূলের কোনও সমস্যা নেই। তৃণমূল সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ রয়েছে। এই বিষয়ে লাভলি খাতুনের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বাংলাদেশের নাগরিক তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান লাভলি খাতুন!
  • লাভলির প্রধানপদ বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করলেন উত্তর মালদহের চাঁচোলের মহকুমা শাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায়।
  • দু'সপ্তাহ আগে লাভলির ওবিসি সার্টিফিকেট জাল বলে জানিয়েছিল মহকুমা প্রশাসন।
Advertisement