সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্ল্যাক হোল (Black Hole)। মহাকাশের (Space) অনন্ত বিস্ময়। ব্ল্যাক হোল নিয়ে নিত্যনতুন আবিষ্কার করেই চলেছেন বিজ্ঞানীরা। এই মহাজাগতিক বস্তুদের নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন এমন এক অতিকায় ব্ল্যাক হোল, যেটি আকারে সূর্যের চেয়ে ১২ গুণ বড়। আর যার অবস্থান সূর্যের একেবারে কাছেই। এখনও পর্যন্ত যত ব্ল্যাক হোলের সন্ধান মিলেছে তার মধ্য়ে এটিই সৌরজগতের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থিত। আর এই আবিষ্কারের পিছনে অন্যতম নাম এক বঙ্গতনয়া- পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক সুকন্যা চক্রবর্তী।
সুকন্যার নেতৃত্বে অ্যালাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক দল ওই ব্ল্যাক হোলের সন্ধান পেয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত জার্নাল ‘রিসার্চ সাবমিশনে’। জানা যাচ্ছে, ১ হাজার ৫৫০ আলোকবর্ষ দূরত্বে অবস্থিত ব্ল্যাক হোলটি। আপাত ভাবে এই দূরত্ব প্রায় অসীম। কিন্তু সূর্যের সঙ্গে দূরত্বের নিরিখে এটিই নিকটতম ব্ল্যাক হোল। তেমনটাই দাবি গবেষকদের।
[আরও পড়ুন: কালীপুজোর পরদিনই খণ্ডগ্রাস সূর্যগ্রহণ, দেখা যাবে ভারত থেকেও]
গবেষক সুকন্যা এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান, ”১ হাজার ৫৫০ আলোকবর্ষ দূরত্বে অবস্থিত ওই ব্ল্যাকহোলটিই এখনও পর্যন্ত যত ব্ল্যাকহোলের সন্ধান মিলেছে, তাদের মধ্য়ে সূর্যের নিকটতম। সেই হিসেবে বললে এটা একেবারে যেন আমাদের বাড়ির পিছনদিকেই অবস্থিত।”
মহাকাশের পরিবারে ব্ল্যাক হোল যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেকথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন সুকন্যা। তিনি বলছেন, ”বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় কোনও কোনও অতিকায় ব্ল্যাক হোল গ্যালাক্সির একেবারে কেন্দ্রে অবস্থান করে। তারা গ্যালাক্সির গঠন ও পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে আমাদের আকাশগঙ্গাকে এই ব্ল্যাক হোল কতটা নিয়ন্ত্রণ করে সেটা এখনও জানা যায়নি। তবে যদি এরা সংখ্যায় বেশি হয়, তাহলে আমাদের গ্যালাক্সির গঠনেও এদের বিপুল প্রভাব থাকতে পারে।”
[আরও পড়ুন:‘কোভিড নিয়ে আমজনতার মতো আমিও বিরক্ত’, বিস্ফোরক সেরাম কর্তা আদর পুনাওয়ালা]
উল্লেখ্য, ব্ল্যাক হোলের গঠন ও চরিত্রকে আরও নিখুঁত ভাবে জানতে সারা পৃথিবীতেই কাজ করে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। কিছুদিন আগেই বিজ্ঞানীরা দাবি করেছিলেন মহাকাশে বিপুল সুনামি তৈরি করে ফেলতে পারে ব্ল্যাক হোল। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA জানিয়েছিল, যখন কোনও বিপুল ভরের ব্ল্যাক হোল নিজের কেন্দ্রে ঘূর্ণায়মাণ নিউক্লিয়াস গঠন করে তখন প্রচুর পরিমাণে গ্যাস তার কেন্দ্র থেকে সরে যায় মেরুর দিকে। শেষ পর্যন্ত সেখানে বিপুল গ্যাসীয় ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। সেই ঢেউ ব্ল্যাক হোলের সীমান্তের অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি তাপমাত্রার (যা সূর্যের থেকেও ১০ গুণ উত্তপ্ত হতে পারে) সংস্পর্শে এলে তা বিপুল ভাবে ছিটকে উঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে ১০ আলোকবর্ষ পর্যন্ত। সেই প্রবল অভিঘাতকে কল্পনা করাও কঠিন।