স্টাফ রিপোর্টার: আর জি কর হাসপাতালের দুর্নীতিতে চারজন ধরা পড়েছেন। আরও চারজনকে ধরতে হবে। ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা জেরা করলেই ওই চারজনের হদিশ মিলবে। এই অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর এবং বড় ধরনের যড়যন্ত্র যে হয়েছে, সেই প্রমাণও রয়েছে তদন্তকারীদের হাতে। সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে বাকি অপরাধীদের যোগসূত্র যাচাই করার প্রক্রিয়া আপাতত চলছে। আর এই তদন্তের সূত্রেই মূল ঘটনা অর্থাৎ তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার কিনারার যোগসূত্রও মিলতে পারে। সন্দীপ ঘোষকেই যাবতীয় কুকর্মের মাথা হিসাবে ইঙ্গিত করে ঠিক এই ভাষাতেই মঙ্গলবার আদালতে আবেদন পেশ করে সিবিআই।
আর জি করে দুর্নীতির মামলায় সোমবার ধৃত আরজিকরের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, তাঁর ঘনিষ্ঠ দুই ঠিকাদার বিপ্লব সিংহ, সুমন হাজরা এবং সন্দীপের অতিরিক্ত নিরাপত্তারক্ষী আফসার আলিকে সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়। সেখানেই সন্দীপ-সহ ধৃতদের বিরুদ্ধে ওই তথ্য তুলে ধরে তাদের দশদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায় সিবিআই। সওয়াল-জবাব শেষে ধৃত চারজনকে আট দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক সুজিত ঝা।
[আরও পড়ুন: পথ অবরোধের চেষ্টায় বাধা দিতেই মহিলা ডিএসপির চুলের মুঠি ধরে টান বিক্ষোভকারীর!]
সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে বলেন, আরজিকর হাসপাতালের দুর্নীতি মামলায় বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর নথি সংগ্রহ ও উদ্ধার করা হয়েছে। সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও বহু তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিক। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত চারজনই একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। অভিযুক্তরা যে বড় ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত, সেই প্রমাণও সিবিআইয়ের হাতে রয়েছে। যে তথ্য ও নথি উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি যাচাই করতে ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার প্রয়োজন। এখন চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও অনেকে এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে। পরে অবশ্য সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করতে হবে। ধৃতদের জেরা করে তদন্তের আরও জট খুলতে পারে। নতুন কোনও দিশাও পাওয়া যেতে পারে। মূল অপরাধ তথা তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা সম্পর্কেও এর সুবাদেই কোনও যোগ মিলতে পারে।
সিবিআইয়ের আইনজীবী আরও জানান, তদন্তে বিভিন্ন মহলের যোগসূত্র মিলেছে। তদন্তে জানা গিয়েছে যে, অভিযুক্তরা সাতটি ভুয়ো সংস্থা তৈরি করে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে। বেআইনিভাবে টেন্ডার পাইয়ে দিয়েছে। ক্যাফে থেকে শুরু করে পার্কিং ও আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে আর্থিক অপব্যবহার করেছে। এই অপরাধের পরিধি ও ক্ষেত্র অনেকটাই বড়। আসলে অভিযুক্ত অনেকে। মামলায় পাঁচটি ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে। এফআইআরে ধৃতদের মধ্যে তিনজনের নামই রয়েছে। ধৃতরা প্রত্যেকেই বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। সন্দীপ ঘোষ ও অন্য তিনজনকে ১০ সেপ্টেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে।