সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাসখানেক হতে চলেছে একমাত্র সন্তানকে হারিয়েছেন তিনি। সন্তান হারানোর ক্ষত এখনও দগদগে। মেয়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সঞ্জয় রায় ছাড়া এখনও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ। এবার সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। সুপ্রিম কোর্টে শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় বাড়ছে হতাশা। এই পরিস্থিতিতে সুবিচারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি নির্যাতিতার বাবা-মায়ের। সন্তানহারা মায়ের ভেজা চোখে একটাই আর্জি, "আমি চাই, অপরাধীরাও আমার মতো ঘুমহারা হোক।"
এদিন নির্যাতিতার বাবা একাধিক প্রশ্ন তোলেন। তাঁর প্রশ্ন, "ময়নাতদন্ত করতে কেন দেরি করা হল? কেন অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করা হল? কারা বিনামূল্যে দেহ দাহর ব্যবস্থা করল? ময়নাতদন্তের আগে কেন বলা হল আত্মহত্যা করেছে? আমাদের উত্তর কে দেবে পুলিশ নাকি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ?" পুলিশের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন তিনি। নির্যাতিতার বাবার দাবি, পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের টাকার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বার বার মিথ্যা কথা বলছেন বলেও অভিযোগ তাঁর। শুধু বাবা-মা-ই নন। নির্যাতিতার কাকিমাও ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি জানান, "ওইদিন (৯ আগস্ট) সকাল ১০ টা ৫৫ মিনিট নাগাদ খবর পাই। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে গাড়ি নিয়ে আমরা আসি। চারজন একসঙ্গে এসেছিলাম। দেহ দাহ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ ঘিরে রেখেছিল আমাদের। অন্তত তিন থেকে চারশো পুলিশ আমাদের পরিবারকে আটকে রেখেছিল।"
[আরও পড়ুন: বসছে না প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ, লক্ষ্মীবারে আর জি কর মামলার ‘সুপ্রিম’ শুনানি স্থগিত]
উল্লেখ্য, গত ৮ আগস্ট, নাইট শিফট ছিল তরুণী চিকিৎসকের। পরদিন সকালে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (RG Kar Medical College & Hospital) তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। কলকাতা পুলিশের সিট এই ঘটনায় সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্তভার নেওয়ার পর পুলিশের কাছ থেকে সিবিআই সঞ্জয়কে হেফাজতে নেয়। তবে তরুণী চিকিৎসক হত্যাকাণ্ডে এখনও নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করা হয়নি। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল। তার আগের রাতে এক ঘণ্টা আলো নিভিয়ে অভিনব প্রতিবাদের ডাক দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে এদিন রাত ৯টায় আলো নিভিয়ে দেওয়া হয় রাজভবনে। আঁধারে ঢাকে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বর-সহ শহরের প্রায় বিভিন্ন প্রান্ত।