সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের টালমাটাল সময়ে প্রধানমন্ত্রীর পদে বসে অর্থনীতির হাল ধরেছিলেন। বিশ্বের দরবারে ব্রিটিশ রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক ধারণা পালটে দিয়েছিলেন তিনি। তাই দেশবাসী ভরসা রাখছে সেই ঋষি সুনাকের (Rishi Sunak) উপরেই। সম্প্রতি একটি সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, দেশের নেতা হিসাবে বরিস জনসন নয়, ঋষি সুনাককেই চাইছে ব্রিটেনের অধিকাংশ নাগরিক। তাঁদের মতে, দল ও দেশের ভাবমূর্তিকে আরও স্বচ্ছ করে তোলার জন্য ঋষিই যোগ্য কারিগর। প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ রাজনীতিতে মনে করা হত বরিসই (Boris Johnson) সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। কিন্তু সম্পূর্ণ উলটো কথা বলছে এই সমীক্ষা।
কয়েকদিন আগেই সিটবেল্ট ছাড়া গাড়ি চালিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তার পরেই প্রকাশ্যে আসে নয়া সমীক্ষার রিপোর্ট। সাভান্তা কমরেস নামে এক সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে বরিসের জনপ্রিয়তার জোরেই বিপুল সাফল্য পেয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টি। কিন্তু ২০২৪ সালের আসন্ন নির্বাচনে সেই বরিসকেই নেতা হিসাবে দেখতে চাইছেন না ব্রিটেনের ৬৩ শতাংশ মানুষ। তাঁদের মতে, টোরি পার্টির ভাবমূর্তি আবার গড়ে তোলার যোগ্য কারিগর সুনাকই। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, ৪১ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন, ঋষিই দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।
[আরও পড়ুন: খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাড়িতে FBI হানা, ম্যারাথন তল্লাশিতে উদ্ধার বহু গোপন সরকারি নথি]
ব্রিটেনের ৪৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, দেশের বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। একই ক্ষেত্রে জনসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন মাত্র ১৯ শতাংশ মানুষ। এমনকি দেশের মানুষ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ‘মিথ্যাবাদী’র তকমাও দিয়েছেন। কারণ এই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, মাত্র ১৪ শতাংশ মনে করেন দেশের মানুষকে সত্যি কথা বলবেন জনসন। অন্যদিকে, ৩৯ শতাংশের মতে, ঋষি সত্যি কথা বলবেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জনসনের পতনের প্রধান কারণ ছিল পার্টিগেট। সেখানে ঋষি ও বরিস দু’জনের নাম জড়িত থাকলেও জনতার চোখে কার্যত নির্দোষ ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী। মাত্র ৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন পার্টিগেটের দায় সুনাকের।
২০২২ সালের মাঝামাঝি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তারপর প্রায় দু’মাস ধরে টোরি পার্টির অন্দরে ভোট প্রক্রিয়া চলে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন লিজ ট্রাস। তবে বেশিদিন সরকারের নেতৃত্ব দিতে পারেননি বরিসপন্থী এই নেত্রী। ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। অর্থনীতির ক্ষেত্রে বেহাল দশা সামলাতে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী পদে বসেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি। প্রাথমিকভাবে বরিসপন্থীদের অনুমান ছিল, ২০২৪ সালে জনসনের নেতৃত্বেই ভোটে লড়বে কনজারভেটিভ পার্টি। কিন্তু জনমত বলছে অন্য কথা।