সুকুমার সরকার, ঢাকা: দীর্ঘ ৫৯ বছরের প্রতীক্ষার অবসান। অবশেষে চালু হল রাজশাহী-মুর্শিদাবাদ আন্তর্জাতিক নৌপথ। তবে তা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। সোমবার বাংলাদেশ (Bangladesh) ও ভারতের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মন্ত্রীরা যৌথভাবে এই নৌপথ উদ্বোধন করেছেন। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে আরও গতি আসবে বলে আশাবাদী সকলে।
১৯৬৫ সালের আগে ভারতের মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সাগরদিঘির ময়াবন্দর থেকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজশাহীর গোদাগাড়ির সুলতানগঞ্জ পর্যন্ত নৌপথে পণ্য পরিবহণ করা হতো। কিন্তু সে বছর পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের কারণে অন্যান্য স্থানের মতো এই রুটটিও বন্ধ হয়ে যায়। এখন দুই দেশের নৌ প্রোটোকলের আওতায় এই পথ আবার চালু হচ্ছে। এই নৌপথের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের মায়াবন্দরে উপস্থিত জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। আর বাংলাদেশের গোদাগাড়ির সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরে রয়েছে নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা।
[আরও পডুন: আরও কাছাকাছি! আরামবাগে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গী দেব]
বাংলাদেশ ও ভারতের (India) মধ্যে স্বাক্ষরিত অভ্যন্তরীণ নৌপথ অতিক্রম ও বাণিজ্য প্রোটোকলটি (পিআইডাব্লিউ টিঅ্যান্ডটি) ১৯৭২ সাল থেকে চালু রয়েছে। ২০২০ সালে পিআইডাব্লিউ টিঅ্যান্ডটি দ্বিতীয় সংশোধনী সই হয়েছে। সংশোধনীর মাধ্যমে পিআইডাব্লিউ টিঅ্যান্ডটির ৫ ও ৬ নম্বর রুটটি রাজশাহী থেকে আরিচা পর্যন্ত বর্ধিত করায় সম্পূর্ণ রুটটি হলো আরিচা-রাজশাহী-গোদাগাড়ি-সুলতানগঞ্জ-মায়া-ধুলিয়ান। বাংলাদেশ অংশে রাজশাহী ও গোদাগাড়ি বা সুলতানগঞ্জ এবং ভারতীয় অংশে মায়া ও ধুলিয়ানকে নতুনভাবে পোর্ট অফ কল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ৫ ও ৬ প্রটোকল রুটটি পদ্মা নদীর আরিচায় এসে প্রটোকল রুট ১ ও ২ নম্বরের(কলকাতা-কোলাঘাট-হলদিয়া-রায়মঙ্গল-চালনা-খুলনা-মোংলা-কাউখালী-হিজলা-চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ-পানগাঁও-আরিচা-সিরাজগঞ্জ-বাহাদুরাবাদ-চিলমারী-ধুবরী-যোগীগোপা-পাণ্ডু-শীলঘাট) এবং প্রটোকল রুট ৭ ও ৮ নম্বরের (বদরপুর-কালীগঞ্জ-জকিগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ-শেরপুর- মাজুলি-আজমিরীগঞ্জ-আশুগঞ্জ-ভৈরববাজার-ঘোড়াশাল-নারায়ণগঞ্জ-পানগাঁও-চাঁদপুর-আরিচা-সিরাজগঞ্জ-বাহাদুরাবাদ-চিলমারী-ধুবরী-যোগীগোপা-পাণ্ডু-শীলঘাট) সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।নৌপথে আরিচা-রাজশাহীর দূরত্ব ১৭৫ কিলোমিটার।
[আরও পড়ুন: পুরনোতেই আস্থা, রাজ্যসভায় বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য]
রাজশাহী-গোদাগাড়ি বা সুলতানগঞ্জ ৩৬ কিলোমিটার, গোদাগাড়ী বা সুলতানগঞ্জ-মায়া ২০ কিলোমিটার এবং মায়া-ধুলিয়ান ৪১ কিলোমিটার। ২৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ পুরো প্রটোকল রুটটি চালু করা সম্ভব হলেই এর উপযোগিতা পাওয়া যাবে। তবে পদ্মা নদীর পুরো রুটটিতে শুষ্ক মরশুমে নাব্যতা প্রতিকূলতা তৈরি করলেও মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরত্বের সুলতানগঞ্জ-মায়া প্রোটোকল রুটে সারা বছরই স্বল্প নাব্যতার নৌ চলাচলের মধ্যে দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চালাতে অসুবিধা হবে না।