নব্যেন্দু হাজরা: বছরে ৭০ শতাশের বেশি দুর্ঘটনার কারণ গাড়ির বেপরোয়া গতি। তাই পথ দুর্ঘটনার হার কমাতে এবার যানবাহনের ‘গতি নিয়ন্ত্রণ নীতি’ আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। পরিবহণ দপ্তরের এক অনুষ্ঠানে কলকাতার অহীন্দ্র মঞ্চে একথা ঘোষণা করেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
তিনি বলেন, “অন্যান্য অনেক রাজ্যের তুলনায় এই রাজ্যে পথ দুর্ঘটনার হার কম। তাকে আরও কমাতে এবার ‘স্পিড ম্যানেজমেন্ট পলিসি’ আনছে রাজ্য সরকার। যে সমস্ত রাস্তায় দুর্ঘটনার হার বেশি সেগুলোকে সেফ করিডোর প্রকল্পের আওতায় এনে সেগুলোকে ঝুঁকিহীন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।” মন্ত্রীর কথায়, “পথ দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হল গাড়ির গতি। তাই সেই গতিকে যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে দুর্ঘটনার হার অনেকটাই কমবে। পাশাপাশি আমরা কিছু সাইনেজের মাধ্যমে পথচারী থেকে শুরু করে গাড়ির চালকদের সচেতন করব। যাতে তাঁরা সতর্ক ভাবে গাড়ি চালান। পথচারীরাও সতর্কভাবে চলাফেরা করেন।”
দেশের মধ্যে প্রথম পশ্চিমবঙ্গেই এই নীতি আনা হচ্ছে। যে বিষয়ে আইআইটি খড়গপুরের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া গোটা প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকছে রাজ্য পুলিশ, কলকাতা পুলিশ, গ্রামোন্নয়ণ ও নগরোন্নয়ণ দপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর এবং স্কুল শিক্ষা দপ্তর। এই সংক্রান্ত একটি বই প্রকাশ করা হয় পরিবহণ দপ্তরের তরফে। দেখা যাচ্ছে, দুর্ঘটনার শতাংশের নিরিখে বেশিরভাগই হয়েছে গাড়ির গতির কারণে। তাই নয়া ব্যবস্থায় নজরদারি রাখতে জাতীয় ও রাজ্য সড়ক, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থাভুক্ত সড়ক ও নগরোন্নয়ণ দপ্তরের অধীনস্থ সড়কগুলোর ‘সেফ স্পিড অডিটের’ বন্দোবস্ত করা হয়েছে। যেখানে রাস্তার ইঞ্জিনিয়ারিং, ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর পাশে সন্দেশখালির ‘বাদশা’ শেখ শাহজাহান! ছবি ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক]
মন্ত্রী আরও বলেন, “গত ১০ বছরে রাস্তা বেড়েছে। এক লক্ষ কিলোমিটার রাস্তা হয়েছে। গাড়ি দ্রুত চলারও প্রবণতা বেড়েছে। তাতেই বিপত্তি ঘটছে। তবে আমরা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার স্পিড লিমিট বেধে দেব। গতি কমলেই দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমবে।” খড়গপুর আইআইটি-র বিশেষজ্ঞ ভার্গব মৈত্র এদিন বলেন, “রাস্তায় ৭০ শতাংশ দুর্ঘটনা গতির কারণে হয়। তাই রাস্তায় গাড়ির গতিবেগ কমানো জরুরি। রাস্তা বুঝে তার মাপও ঠিক করে দেওয়া দরকার।”
রাজ্যের পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন জানান, পুলিশ, পরিবহণ দপ্তর ছাড়াও যারা যারা পথনিরাপত্তার বিষয়টির সঙ্গে যুক্ত, তাদের সবার সমন্বয়ের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা জরুরি। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি ট্রাফিক শ্রীকান্ত জে, আইজি ট্রাফিক বিপি সিং-সহ সমস্ত কমিশনারেটের পথ নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্তা। পরিবহণ, স্বাস্থ্য, স্কুলশিক্ষা, পূর্ত দপ্তরের আধিকারিক এবং সমস্ত আরটিও-এআরটিওরা।