সুকুমার সরকার, ঢাকা: মায়ানমারে সেনা অভিযানের ফলে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অবশেষে নোয়াখালির ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে প্রথম দফায় উদ্বাস্তুদের একটি দলের চরটিতে যাওয়ার কথা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক মহলের বিরোধিতার সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার একলক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসানচরে (Bhashan Char) নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে পেছনে ফিরছে না। আর নিজেদের দেশে এখনও ফিরতে না পারা রোহিঙ্গারাও শিবিরের জনাকীর্ণ পরিবেশের থেকে নতুন চরে গিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে আগ্রহী। এমন ইচ্ছা পোষণ করা রোহিঙ্গাদের পাল্লা ক্রমশই ভারী হচ্ছে। প্রথমে রাজি না হলে শেষ পর্যন্ত তারা জায়গা বদল করতে সম্মতি দিচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: ‘স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র চায় বাংলাদেশ’, ইজরায়েলকে তোপ প্রধানমন্ত্রী হাসিনার]
রোহিঙ্গা (Rohingya) শিবিরগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে ঘটে যাওয়া অপরাধমূলক কাজের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ভূমিকা নেওয়ার পরই পরিস্থিতি পালটে যেতে থাকে। বিদেশি নানা গোষ্ঠীর মদতে এতদিন যারা রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে ভাসানচর বিরোধী অপপ্রচার চালিয়ে আসছিল, তারা এখন ঝিমিয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিবিরগুলিতে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তারা ভাসানচরের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার পরই রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছেন।
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা প্রত্যাপর্ণ সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুর মহম্মদ শিকদার বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলি কেবল নিজেদের সুযোগ-সুবিধার জন্যই দীর্ঘদিন ধরে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরে নানাভাবে বাধা দিয়ে আসছে। না হলে অনেক আগেই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হত। কুতুপালং শিবিরের একজন রোহিঙ্গা জানান, সন্ত্রাসবাদী মনোভাবের রোহিঙ্গাদের অত্যাচারে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তাই তাঁরা যে কোনওভাবে মায়ানমারে ফিরতে চান। তবে যতদিন সেখানে ফিরে যাওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হবে না, ততদিন ভাসানচরের নিরাপদ স্থানে থাকতে চান। তাই বাংলাদেশ সরকারের এই উদ্যোগে তাঁরা বেশ খুশি।