সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা জঙ্গিদের হামলা। সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে আহত হয়েছেন তিনজন। এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে।
জানা গিয়েছে, কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয় শিবিরে (ক্যাম্প-৪) মায়ানমারের (Myanmar) জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আরাকান স্যালভেশন আর্মি’র (আরসা) গুলিতে তিনজন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে আরসার ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল হামলা চালায়। ক্যাম্পে গুলি চালিয়ে পাহাড়ে আত্মগোপন করেছে বলে জানা গিয়েছে। আহত ব্যক্তিদের নাম হচ্ছে-কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৪) ডি-ব্লকের ব্যবস্থাপনা কমিটির হেড মাঝি (প্রধান নেতা) মহম্মদ হোসেন আলী (৫৫), একই শিবিরে এফ-ব্লকের রোহিঙ্গা রশিদ আলম (৪০) ও নূর হোসেন (৪২)।
[আরও পড়ুন: মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদক ও অস্ত্র আনছে রোহিঙ্গারা, উদ্বেগ উসকে জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী]
আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভরতি করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে হেড মাঝি মহম্মদ হোসেন আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গিয়েছে। তিনি হাতে ও বুকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতারা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও পুলিশ সুপার নাইমুল হক স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, রাতে এক বাড়িতে খাবার খেয়ে হেড মাঝি হোসেন আলী-সহ কয়েকজন রোহিঙ্গা বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় আরসা সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর গুলি চালায়। গুলিতে হোসেন আলী-সহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রসঙ্গত, মায়ানমারে রোহিঙ্গা (Rohingya) জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি তথা আরসা-কে মদত দিচ্ছে তারা। আর সেই প্রভাব এসে পড়ছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে। বিগতদিনে শরণার্থীদের মধ্যে জঙ্গিদের তৎপরতা বেড়েছে বলেও একাধিক রিপোর্টে জানিয়েছে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা সংস্থাগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে শরণার্থী শিবিরে ফের রোহিঙ্গা নেতা খুন হওয়ায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন দেশের প্রশাসন ও নিরাপত্তামহল।