সৌরভ মাজি, বর্ধমান: সরকারের তরফে পড়ুয়াদের জন্য পাঠানো বস্তাবন্দি ছোলা প্যাকেটে ভরতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ শিক্ষকদের। কারণ, অর্ধেক ছোলায় পোকা, ছত্রাক ভরতি। এই ছোলা পড়ুয়া-অভিভাবকদের হাতে তুলে দিলে পরিস্থিতি কী হবে, তা আশঙ্কা করে সামগ্রী বিলি করতে সাহসই পাচ্ছেন না পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) গলসির স্কুলের শিক্ষকরা।
লকডাউনের শুরু থেকেই রাজ্য সরকারের তরফে মিড-ডে মিলের সামগ্রীর পাশাপাশি ছোলা পাঠানো হচ্ছিল ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। সপ্তাহে ২৫০ গ্রাম, এই হিসেবে ছোলা পাঠানো হচ্ছিল। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের এই ছোলা ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া বা এফসিআই-এর মাধ্যমে স্কুলে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। সেই মোতাবেক জেলার সমস্ত পুরসভা ও ব্লক গুলিতে ছাত্রছাত্রীদের পরিমাণ মতো ছোলা পাঠানোর কাজ শুরু করে এফসিআই (FCI)। গলসি ২ ব্লকের ১৬৭ টি স্কুলের জন্য পাঠানো হয় ছোলা। অভিযোগ, সেই ছোলার মান এতটাই খারাপ যে তা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিলি করতে শিক্ষকরাই ভয় পাচ্ছেন। শিক্ষকদের নিজের গ্রুপে বিষয়টি নিয়ে বিস্তর লেখালিখি করেন। এরপর এই বিষয়টি বিদ্যালয় পরিদর্শক ও বিডিও’র নজরে পড়ে। খোঁজ নিয়ে গোটা ঘটনা জেলার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানান বিডিও। গলসি ২ ব্লকের বিডিও শঙ্খ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শিক্ষকদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি আমরা বিষয়টি। ৯ তারিখ থেকে পড়ুয়া পিছু ১ কেজি করে ছোলা দেওয়ার কথা। আমাদের ব্লকে ১৬৭টি স্কুলে ১৮ হাজার ছাত্র-ছাত্রী মাথা পিছু ১ কেজি পাবে। শিক্ষকরা প্যাকেট করতে গিয়ে দেখেছেন এফসিআই থেকে পাঠানো ছোলার মান খুবই খারাপ। বিষয়টি আমরা ব্লক থেকে মহকুমা শাসক ও অতিরিক্ত জেলাশাসককে (শিক্ষা) জানিয়েছি।’
[আরও পড়ুন: ‘গাফিলতি’তে প্রৌঢ়ার মৃত্যু, সিঙ্গুরে চিকিৎসকের বাড়িতে হামলা রোগীর আত্মীয়দের]
এবিষয়ে শৈলেন সাহা নামে এক শিক্ষক বলেন, “সরকারের তরফ থেকে যে ছোলা দেওয়া হয়েছে, সেটা কোনভাবেই মানুষের খাবারের যোগ্য নয়। আমার স্কুলে আমি দেব না। অভিভাবকদের বলব, তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই তখন করব।” বিদ্যালয় পরিদর্শক জয়ন্ত ঢালির কথায়, “আমরা বিষয়টি জেনেছি। ছোলার মান খারাপ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” মসজিদপুর এলাকার এফসিআই যে সমিতির মাধ্যমে এই ছোলা দেওয়া হয়েছে সেই সমিতির ম্যানেজার কেনারাম মাকর বলেন, “যা ছোলা পেয়েছি তা-ই দিয়েছি। সিল করা বস্তার ভিতরে ছোলা খারাপ না ভাল সেটা বলতে পারব না।”