রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: হাজরার সভা নিয়ে বিজেপিতে তুলকালাম। শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। সোমবার হাজরা মোড়ে সভা করছে বঙ্গ বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গা-জোয়ারি করে নিজের সিদ্ধান্তেই হাজরাতে সভা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। দলীয় সূত্রে খবর, দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও জেলা নেতৃত্বকে বলেছেন, “আমিও যাব ওই সভায়।” শুভেন্দু কিন্তু কোনওভাবেই চাননি সুকান্ত মজুমদার তাঁর ঘোষণা করা সভায় থাকুন। কারণ, সুকান্ত ও শুভেন্দুর মধ্যে সম্পর্কের ফাটল নিয়ে জোর চর্চা রয়েছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। আর একা এই সভা করতে গিয়ে আরএসএস-এর চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল শুভেন্দু অধিকারীকে।
সূত্রের খবর, শুভেন্দু অধিকারী হাজরা মোড়ে সভা ঘোষণার পর সুকান্ত দলের দক্ষিণ কলকাতা জেলা নেতৃত্বকে ফোন করে জানান, তিনিও ওই সভায় যাবেন। আর সেটা শুনেই শুভেন্দু ব্যাপক বেঁকে বসেন। শুভেন্দু জানিয়ে দেন, “আমি যাব না। সবটাই রাজ্য নেতৃত্ব করুক। আমি কোনও দায়িত্ব নেব না।” এরপরই দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপি বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে বলে। রাজ্য বিজেপি আবার সবটা আরএসএস-কে জানায়। সূত্রের খবর, আরএসএস শুভেন্দু অধিকারীকে ডেকে পাঠায়। আরএসএসের তরফে পরিষ্কার শুভেন্দুকে বলে দেওয়া হয়, “আপনি যেভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক দল চালাচ্ছেন সেটা আমরা অনুমোদন করছি না। আপনার একার কোনও কর্মসূচি নয়, এটা দলের কর্মসূচি। সুকান্ত মজুমদার বা দল যাকে মনে করবে সেখানে পাঠাবে। আপনি বাইরে থেকে কিছু করবেন না। দলের কাঠামোর মধ্যে থেকে কাজ করুন।”
[আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে তৃণমূলের চাটাই বৈঠকে জনজোয়ার, সুপারফ্লপ বিজেপি]
পাশাপাশি শুভেন্দুকে দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা বলতে বলে আরএসএস। বলে দেওয়া হয়, দলের দক্ষিণ কলকাতার নেতৃত্ব যেভাবে বলবে, তাদের মতামত নিয়ে সভা করতে হবে। ফলে আরএসএসের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে দক্ষিণ কলকাতা বিজেপির জেলা অফিসেও যান শুভেন্দু। সুকান্তর সঙ্গে তারপর কথাও বলেন শুভেন্দু। এদিকে আবার সুকান্তও বলেন, ঠিক আছে, আপত্তি থাকলে যাব না। এখন শুভেন্দু ও সুকান্তর মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্বের রেশ হাজরার সভাতেও পড়তে চলেছে। এখন বিষয়টা এমনই দাঁড়িয়েছে, আজ হাজরার সভায় যদি সুকান্ত মজুমদার না আসেন তাহলে শুভেন্দুর উপর গোটা আরএসএস চটবে। কারণ শুভেন্দু কলকাঠি নেড়ে সুকান্তকে আসতে দেননি তাহলে সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
আর সুকান্ত যদি সভায় আসেন তাহলে বোঝা যাবে, শুভেন্দুর আপত্তি উড়িয়েই আরএসএস সুকান্তকে হাজরার সভায় পাঠাল। এদিকে, হাজরার সভায় জমায়েত নিয়েও অবশ্য চিন্তায় রয়েছে বিজেপি। কারণ, দক্ষিণ কলকাতা জেলার পক্ষে সভা ভরানো সম্ভব নয়। আর সেটা বুঝেই উত্তর কলকাতা ও দুই ২৪পরগনা থেকে লোক দিতে বলা হয়েছে। উত্তর কলকাতার জমায়েত হবে ম্যাডক্স স্কোয়ারে। দক্ষিণ কলকাতা জেলার কর্মীরা সরাসরি হাজরা মোড়ে আসবেন। আর দক্ষিণ ২৪পরগনা থেকে যাঁরা আসবেন তাঁরা দক্ষিণ শহরতলির কোথাও জমায়েত হবে বলে জানা গিয়েছে।