সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীলঙ্কায় (Sri Lanka) বেনজির অর্থনৈতিক সংকট। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ইস্তফা দিয়েছে গোটা মন্ত্রিসভা। এই অবস্থায় মঙ্গলবার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকার। জানা গিয়েছে, ৪১ জন সাংসদ ওয়াক আউট করেছেন এদিন।
এই পরিস্থিতিতে কি পদত্যাগ করবেন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে? সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি নিজেই। সেই সঙ্গে বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি জানিয়েছেন, সরকারকে হস্তান্তরিত করতে তিনি রাজি, যদি কোনও দল ১১৩টি আসন-সহ সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারে।
[আরও পড়ুন: আলিয়ার পর ভাইরাল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিডিও, তৃণমূলকে ‘পুড়িয়ে মারা’র নিদান বাম ছাত্রর]
উল্লেখ্য, চিন থেকে ঋণ নিয়ে বিপাকে দেশটি। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ শ্রীলঙ্কা। দেশটির বিদেশি ঋণের পরিমাণ বিপুল আকার ধারণ করেছে। এই ঋণের অর্ধেকেরও বেশি চিন থেকে নেওয়া। গত সাত দশকে সবচেয়ে বড় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটি। বিদ্যুতের অভাবে ব্ল্যাক আউট চলছে দেশে। খাবার, ওষুধ অগ্নিমূল্য। এমনকী মিলছে না প্রতিদিনের প্রয়োজনের রান্নার গ্যাস। এই অবস্থায় অনেকেই শ্রীলঙ্কা ছেড়ে ভারতে চলে আসছেন।
দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। গতকাল, শ্রীলঙ্কার পেরাদানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের বাইরের রাস্তায় দল বেঁধে হাঁটতে দেখা গিয়েছে পড়ুয়াদের। যে করেই হোক তাঁদের রুখতে জলকামান, কাঁদানে গ্যাস, লাঠির ব্যবহার করেছে পুলিশ। এমনকী আকাশে গুলি ছুঁড়েও ভয় দেখানো হয়। কিন্তু সেসব অগ্রাহ্য করেই আন্দোলন চলছে।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলা মিডিয়াম’ নিয়ে RJ অয়ন্তিকার মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক, খোলা চিঠিতে পালটা রাহুলের]
দেশজুড়ে চলা প্রবল গণবিক্ষোভের জেরে রবিবার রাতে শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া মন্ত্রিসভার বাকি ২৬ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তথা দেশের যুব এবং ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী নামাল রাজাপক্ষের পদত্যাগের পরে রটে যায় প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজপক্ষেও ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু সেই খবরকে গুজব বলে খারিজ করে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। গোটা মন্ত্রিসভা ইস্তফা দিলেও, প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন রয়েছেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোগান্তির শেষ নেই সাধারণ মানুষের। জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। দীর্ঘ লাইন দিয়ে কিনতে হচ্ছে সবকিছু। দিনে ১০-১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। বিদ্যুৎ বাঁচাতে অধিকাংশ সময়ে নিষ্প্রদীপ রাজপথ। সেদেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পর্যন্ত ক্ষোভে ফুঁসছেন। সাধারণ ফল বিক্রেতা থেকে চাল ব্যবসায়ী, সকলেরই দাবি, দেশের সব কিছুই চিনকে বেচে দিয়েছে রাজাপক্ষে সরকার। এখন অন্য দেশের থেকে ঋণ নিয়ে বাঁচতে চাইছে। যা অসম্ভব বলেই দাবি তাঁদের।