সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালিবান (Taliban) কি কথা রাখবে? রাশিয়া, চিন, পাকিস্তান ও আমেরিকা একযোগে বিষয়টির দিকে নজর রাখছে। তেমনটাই জানিয়েছেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী। পাশাপাশি আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরানোর সিদ্ধান্তকে আক্রমণ করেছেন তিনি। তাঁর কথা থেকে তালিবানকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিতই মিলছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।
১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের (Afghanistan) তালিবান সরকারকে পাকিস্তান-সহ প্রাচ্যের তিনটি দেশ স্বীকৃতি দিয়েছিল। বাকি বিশ্ব জঙ্গিদের সরকারকে স্বীকৃতি দিতে নারাজ ছিল। এবার নতুন করে তালিবান সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই প্রশ্নটা উঠে গিয়েছে, আদৌ কি কোনও দেশ স্বীকৃতি দেবে আফগানিস্তানকে?
[আরও পড়ুন: অপহরণের শাস্তি! রাস্তার মোড়ে ক্রেন থেকে চার ‘দুষ্কৃতী’র দেহ ঝোলাল তালিবান]
সেব্যাপারে সরাসরি কিছু না বললেও তালিবান সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা যাতে রাখে সেদিকে লক্ষ রাখা হবে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী? সের্গেই লেভ্রভের কথায়, ”এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যে প্রতিশ্রুতি ওরা দিয়েছে তা পালন করবে কিনা। আমাদের কাছে এটাই সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাচ্ছে।”
তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি রাশিয়া, চিন ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা কাতার ঘুরে এসেছেন। পরে তাঁরা কাবুলেও গিয়েছেন। সাক্ষাৎ করেছেন তালিবান ও সেখানকার ‘ধর্মনিরপেক্ষ সম্প্রদায়ে’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে। তালিবান সরকার যে আফগান সমাজকে জাতিগত ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে সামগ্রিক ভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না সেই অভিযোগ করেছেন লেভ্রভ।
তবে এরই পাশাপাশি সাংবাদিক সম্মেলন হোক কিংবা রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায তাঁর বক্তৃতা, রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী কড়া সমালোচনা করেছেন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরানোর সিদ্ধান্তকে। তাঁর অভিযোগ, কোনও রকম বিবেচনা না করেই ন্যাটো ও মার্কিন সেনাদের সেদেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র রয়ে গিয়েছে সেদেশে। এই অস্ত্রগুলি যাতে ‘ধ্বংসাত্মক উদ্দেশ্যে’ ব্য়বহৃত না হয়, সেব্যাপারেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রসংঘে রবি-স্মরণ প্রধানমন্ত্রীর, কবিগুরুর কবিতা পাঠ করলেন বাংলায়]
দুই দশক পরে গত আগস্টে আফগানিস্তান দখল করে তালিবান। শুরুতে তারা বলেছিল, নারীর অধিকার রক্ষা-সহ সামগ্রিক ভাবেই আফগান মুলুকে স্থিতাবস্থা ও শান্তি ফেরাবে তারা। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে, ততই পরিষ্কার হয়েছে তালিবান আছে তালিবানেই। একটুও বদলায়নি জেহাদিরা। স্বাভাবিক ভাবেই তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে সংশয়ে গোটা বিশ্বই। তবে বিশ্ব দরবারে তালিবানের হয়ে রীতিমতো ওকালতি করছে কাতার, পাকিস্তান ও চিনের মতো দেশগুলি। এদিকে রাশিয়াও কার্যত তালিবানকে স্বীকৃতি দিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেই সেপ্রসঙ্গে মুখ খুললেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী।