সুকুমার সরকার, ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিপুল জনসমর্থন পেয়েছেন শেখ হাসিনা। টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন। ঐতিহাসিক এই জয়ের জন্য ভারত, চিনের পর মুজিবকন্যাকে অভিনন্দন জানাল রাশিয়া। শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এইবারের নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের রক্তচক্ষু পড়েছিল হাসিনা সরকারের উপর। কিন্তু ঢাকার পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত, চিন ও রাশিয়া। সার্বভৌম দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নাক গলাচ্ছে আমেরিকা বলেও তোপ দেগেছিল মস্কো।
বৃহস্পতিবার রেকর্ড ব্যবধানে জয়ী হয়ে পুনরায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছাপত্র পাঠিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে পুতিন লিখেছেন, ‘রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আশা করি, সরকারের প্রধান হিসাবে আপনার কার্যক্রম আমাদের দেশের জনগণের সুবিধার জন্য গঠনমূলক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করবে।’ এছাড়াও হাসিনার সাফল্য, সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করেন পুতিন।
[আরও পড়ুন: চতুর্থবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনা, ফোনে শুভেচ্ছা জানালেন মমতা]
বলে রাখা ভালো, নির্বাচনে কারচুপি ও হিংসার অভিযোগে বিদ্ধ ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামি লিগ সরকার। বিরোধীদের ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছিল লাগাতার। সেই বিষয়ে মুখ খোলে আমেরিকাও। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে ওয়াশিংটন কড়া হুমকি দিয়েছিল, হিংসায় অভিযুক্তদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে। ওয়াশিংটনের এই ভিসা নীতিকেই আওয়ামি সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিল খালেদা জিয়ার দল বিএনপি। ভোটসন্ত্রাস ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল রাশিয়া। হাসিনা সরকারকে সমর্থন জানিয়ে মস্কোর বক্তব্য ছিল, সার্বভৌম দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নাক গলাচ্ছে আমেরিকা। এটা কাম্য নয়। তবে এই নির্বাচন নিয়ে বিরোধীদের কোনও যুক্তিই ধোপে টেকেনি। গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা জানিয়ে দেন, বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা চতুর্থবারের জন্য শপথ নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। এদিন বোন রেহানাকে চুমু খেয়ে শপথমঞ্চে ওঠেন তিনি। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথ নিয়ে বসেন প্রধানমন্ত্রীর কুরসিতে। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি এদিন শপথ নেন ২৫ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এতদিন বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্ব সামলে আসা আবদুল মোমেন এবার বাদ পড়েছেন। তাঁর জায়গায় বিদেশমন্ত্রী হয়েছেন ‘কলকাতা-বন্ধু’ বলে পরিচিত প্রাক্তন তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী হাসান মাহমুদ। তাঁর সঙ্গে কলকাতার সাংস্কৃতিক মহলের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়।