সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনের দোনবাসে প্রচণ্ড আক্রমণ চালাচ্ছে রুশ ফৌজ। ক্রমে চক্রব্যূহে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলের সেভেরদোনেৎস্ক এবং লিসিচানস্ক- এই দু’টি শহরকে ঘিরে ফেলার চেষ্টায় সেখানে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করছে পুতিন বাহিনী। ওই হামলার এপর্যন্ত দেড় হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন: কোয়াড বৈঠক শেষ হতেই দক্ষিণ চিন সাগরে পেশিশক্তির প্রদর্শন চিনা নৌসেনার]
গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৪ তারিখ ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া। শুরুর দিকে রাজধানী কিয়েভের কাছাকাছি চলে এলেও পালটা লড়াই শুরু করে ইউক্রেনীয় বাহিনী। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আবেদনে সাড়া দিয়ে হাতিয়ার পাঠাতে শুরু করে আমেরিকা ও ইউরোপ। তারপর থেকেই জোর লড়াই চলছে। প্রায় একমাসের লড়াই শেষে কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হয়ে প্রথম পর্যায়ের সামরিক অভিযানে ইতি টানার কথা ঘোষণা করে মস্কো। পাশাপাশি, জানানো হয় যে ‘বিশেষ সামরিক অভিযানে’র দ্বিতীয় পর্বে দোনবাস অঞ্চল মুক্ত করাই রুশ বাহিনী লক্ষ্য।
বিবিসি সূত্রে খবর, দোনবাস অঞ্চলের অর্ধেক এলাকাই লুহানস্কের অন্তর্গত এবং রাশিয়া এখন এই জায়গাটিকেই তাদের যুদ্ধপ্রয়াসের প্রথান কেন্দ্রে পরিণত করেছে। যদি দোনবাস রাশিয়ার (Russia) পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে যায় তাহলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো ইউক্রেন যুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করতে পারেন। কিয়েভ থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জো ইনউড জানিয়েছেন, পূর্ব দোনবাসে রাশিয়া ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম দখল করেছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনী যথেষ্ট বেকায়দায় পড়েছে। কারণ সেনা, কামান, সাঁজোয়া গাড়ি এবং বিমানবাহিনীর শক্তির নিরিখে রাশিয়া অনেকটাই এগিয়ে।
এদিকে, ইউক্রেনের (Ukraine) প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার উপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দোনবাস অঞ্চলে একজন ইউক্রেনীয় সেনার বিপরীতে সাতজন করে রুশ সৈনিক আছে। কিয়েভে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র ওলেক্সান্দর মোতুজিয়ানিক বলছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনও ওই দুটো শহরে যাবার প্রধান রাস্তাটি নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে যুদ্ধ এখনও চলছে। লুহানস্ক প্রদেশের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেন, ওই রাস্তাটি লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ চলছে কিন্তু এটি এখনও সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি। পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্ক (Luhansk) অঞ্চলের সেভেরদোনেৎস্ক শহরের মেয়র আলেকজন্ডার স্টাইউক জানিয়েছেন, গত তিন সপ্তাহের যুদ্ধে সেখানে দেড় হাজারেরও বেশি অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। রুশ বাহিনীর ধারাবাহিক গোলা ও ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণের ফলে শহরের ৬০ শতাংশই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।