সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাঁদের (The Moon) কলঙ্কের কথা তো জানা। চাঁদের গায়ে মরচেও ধরেছে! চমকপ্রদ তথ্য হলেও একথা খাঁটি সত্যি। রাসায়নিক বিক্রিয়ার খেলায় চন্দ্রপৃষ্ঠে মরচে ধরছে। কিন্তু কীভাবে? রসায়নের প্রাথমিক জ্ঞানটুকু থাকলেই একথা জানা সম্ভব যে মরচে আসলে লোহা আর অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় তৈরি হয়। চাঁদে খনিজের মধ্যে লোহার অস্তিত্ব রয়েছে, তা তো জানা। কিন্তু মরচে পড়ার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনটা পেল কোথায় পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ? সেই উত্তর খুঁজতে গিয়েই তাজ্জব বনে গিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
তাহলে কি চাঁদে বায়ুমণ্ডল আছে? সেখান থেকেই কি অক্সিজেন প্রভাব ফেলছে খনিজ ভাণ্ডারে? রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটিয়ে মরচে ধরাচ্ছে? এতদিন তো জানা ছিল, মহাকাশ কেবলই শূন্য। চাঁদের চতুর্দিকও শূন্য থাকার কথা। তাহলে কি ব্যাপারটা এরকম যে চাঁদের দুই মেরুপ্রান্তে যেটুকু জলের অস্তিত্ব আছে, সেখানে জারণ-বিজারণ (Oxidation-Reduction) প্রক্রিয়ায় খনিজ লোহার সঙ্গে অক্সিজেন মিশে মরচে তৈরি করছে? কিন্তু তার উপযুক্ত পরিবেশও তো নেই চাঁদের আশেপাশে। তাহল মরচের রহস্যটা কী? বিস্তর গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বুঝলেন, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকেই অক্সিজেন পৌঁছে যাচ্ছে উপগ্রহে। তার উপস্থিতিতেই চলছে লৌহ আকরিকের খেলা!
[আরও পড়ুন: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মাপার কৌশল বাতলে কোভিডযুদ্ধে নয়া দিশা বেঙ্গালুরুর দুই বিজ্ঞানীর]
সম্প্রতি চন্দ্রযান-১’এর পাঠানো চাঁদের মরচের ছবি দেখে তার কারণ খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা নিজেরাই চমকে গিয়েছেন। তথ্য বিশ্লেষণ করে, অঙ্ক কষে তাঁরা বুঝতে পারেন যে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলই উপগ্রহের গায়ে মরচে ধরাচ্ছে। দিচ্ছে অন্য রূপ। কোটি কোটি বছর ধরেই এমনটা ঘটে চলেছে অন্তরালে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হচ্ছে চাঁদের মরচে। বিজ্ঞানীদের বিশ্লেষণ, পৃথিবীর অক্সিজেন পেয়ে চাঁদের মাটিতে নাকি তৈরি হয়েছে লোহার সবচেয়ে পরিচিত আকরিক – হিমাটাইট (Haematite)। আয়রন অক্সাইড হিসেবে যেটা সবচেয়ে সহজপ্রাপ্ত। তবে এসব বিজ্ঞানের তত্ব বাদ দিলে, চাঁদের নতুন মরচে নিয়ে কবিকুলের চির-রোমান্টিসিজম টাল খাবে না তো? এই ভাবনাও আছে বইকি।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার প্রশিক্ষণ, ফ্রান্সের যন্ত্রপাতি, ‘মিশন গগনযান’ সফল করতে ভারতের পাশে দুই বন্ধু দেশ]
The post শুধু কলঙ্ক নয়, মরচেও ধরছে চাঁদের গায়ে! appeared first on Sangbad Pratidin.