সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জানুয়ারি মাসে আততায়ীর ছুরিকাঘাতে প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছিলেন সইফ আলি খান। যে খবরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় দেশজুড়ে। বিনোদুনিয়া তো বটেই, সরগরম হয় রাজনৈতিকমহলও। যদিও অস্ত্রোপচার করে সপ্তাহ দুয়েক আগেই বান্দ্রার 'সদগুরু শরণে' ফিরেছেন নবাব। এর মাঝে বাড়ি থেকেও বের হয়েছেন করিনার সঙ্গে। ফটোশিকারিদের ক্যামেরাবন্দি সেই মুহূর্তে সইফের হাঁটা দেখে অনেকেই কটুক্তি করেছিলেন, "দেখে তো মনে হয় না কিছু হয়েছে!" তবে রবিবার বিকেলে ফের লীলাবতী হাসপাতালে ছুটতে হল সইফ আলি খানকে।
রবিবার ছুটির দিনে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে হাসপাতালে ঢুকতে দেখা গেল অভিনেতাকে। পরনে সাদা টি শার্ট। চোখে রোদচশমা। ব্যাকব্রাশ করা চুল। নিরাপত্তাবেষ্টনীতে নবাবি স্টাইলে গট গট করে হাসপাতালের ভিতর ঢুকলেন সইফ আলি খান। হামলার ঘটনার পর থেকেই সইফের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ঝলক আরও একবার দেখা গেল রবিবার। পাপারাজ্জিদের দেখে কোনওরকম কথাবার্তা বা অভিবাদন নয়, বরং এড়িয়েই গেলেন নবাব। অস্ত্রোপচারের পরই চিকিৎসকরা সইফকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, বিশ্রামে থাকতে হবে। মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না। ইতিবাচক থাকার পাশাপাশি রুটিন চেকআপ করাতে হবে যথাযথভাবে। নবাবের খেয়াল রাখতে গোটা 'সদগুরু শরণে'র বারান্দা আলোয় মুড়ে দিয়েছেন করিনা কাপুর খান। বোন সাবা আলি খান শুক্রবারই কোরাণ মেনে 'সদকা' পালন করেছেন দাদার মঙ্গলকামনায়। বাড়িতে কোরাণ পাঠের পাশাপাশি দানধ্যানও করতে হয়েছে সাবাকে। এদিকে রবিবার সইফকে লীলাবতীর হাসপাতালে দেখে আবারও অনুরাগীরা উদ্বিগ্ন। অনেকে জিজ্ঞেস করেছেন, সব 'ঠিক আছে তো?' জানা গিয়েছে, এদিন রুটিন চেকআপের জন্যই লীলাবতী হাসাপাতালে যেতে হয়েছে সইফকে।
গত ১৬ জানুয়ারি, ভোররাতে নিজের বাসভবনেই দুষ্কৃতীর ছুরিকাঘাতে গুরুতম জখম হন সইফ আলি খান (Saif Ali Khan)। দিন পাঁচেক হাসপাতালে চিকিৎসার পর 'নবাব' বাড়িতে ফেরেন। সেলেব্রিটিদের অন্দরমহলে এহেন মারাত্মক কাণ্ড ঘটায় নিরাপত্তা নিয়েও মুম্বই প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। তবে বলিউড অভিনতা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও সেই ইস্যু নিয়ে জলঘোলা অব্যাহত! সইফ আলি খানের উপর আততায়ীর হামলার ঘটনা এখনও 'টক অফ দ্য টাউন'। প্রায় একমাস কেটে গেলেও সেই ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও প্রচুর!
জানা গিয়েছে, সইফ-করিনার দুই সন্তান জেহ-তৈমুরের (Jeh-Taimur) ঘরেই নাকি হামলার ঘটনা ঘটে। যথাসময়ে সইফ সেখানে উপস্থিত না হলে দুই সন্তানের পাশাপাশি বাড়ির পরিচারিকার বড়সড় বিপদ হতে পারত। তবে নিজের জীবন বাজি রেখে দুষ্কৃতীর উপর ঝাপিয়ে পড়েন নবাব। তখনই ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি। সেইসময়ে স্ত্রী করিনা কাপুরও বাড়িতেই ঘুমোচ্ছিলেন রাতপার্টির পর। বান্দ্রা পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, রাত দুটোর সময়ে সইফ-করিনার বাড়ির পরিচারিকা এলিয়ামা ফিলিপস ওরফে লিমাই প্রথম ওই দুষ্কৃতীকে দেখতে পান। তৎক্ষণাৎ তিনি চিৎকার করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সজাগ করে দেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সইফ সেই চিৎকার শুনেই ঘুম থেকে উঠে জেহ-তৈমুরদের ঘরে গিয়ে প্রথমে বচসায় জড়ান। তার পর শুরু হয় ধস্তাধস্তি। তখনই ধারালো অস্ত্র দিয়ে অভিনেতার আক্রমণ করা হয়। যে ছুরির ২ ইঞ্জির মতো অংশ সইফের পিঠে ঢুকেছিল। যার ফলে শিরদাঁড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নবাবের। ডা. নীতিন দাঙ্গের তত্ত্বাবধানে আড়াই ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর যদিও ছুরির ওই অংশ বের করতে সক্ষম হয়েছেন চিকিৎসকরা। হাত এবং ঘাড়ের গভীর ক্ষততে প্লাস্টিক সার্জারি করা হয়েছে লীলাবতী হাসপাতালে।
