সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় আড়াই বছরেরও বেশি সময় তিনি ছিলেন গরাদের পিছনে। অভিযোগ উঠেছিল, জেলে ভয়াবহ যৌন অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাঁকে। অবশেষে মুক্তি পেলেন সৌদি আরবের (Saudi Arabia) বিখ্যাত সমাজকর্মী ও নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম মুখ লুইজেন অল হাথলাউল (Loujain al-Hathloul)। ৩১ বছরের এই যুবতীকে ২০১৮ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কেবল তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন মহিলা সমাজকর্মীকেও জেলবন্দি হতে হয়েছিল। বিশ্বজুড়ে লুইজেনের গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল বহু সংগঠন। অবশেষে মুক্তি পেলেন তিনি। তাঁর মুক্তির সংবাদকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden)।
তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন জানিয়েছেন, ”এটা হওয়া দরকার ছিল।” সেই সঙ্গে তাঁকে কারাবন্দি করার সিদ্ধান্তকে একহাত নিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন বিদেশ দপ্তরের তরফে সৌদি প্রশাসনের তীব্র নিন্দা করে বলা হয়েছে, নারী অধিকার ও মানবাধিকার নিয়ে কেউ সোচ্চার হলে সেই কারণে তাঁকে জেলবন্দি করা ঘোরতর অন্যায়। কেবল আমেরিকা নয়, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও (Emmanuel Macron) লুইজেনের মুক্তির খবরে আনন্দ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ”এতদিনে ওঁর পরিবার স্বস্তি পাবে।” লুইজেনের বোন লিনাও টুইটারে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। দিদির মুক্তির খবর জানিয়ে তিনি লেখেন, “লুইজেন বাড়ি ফিরে এসেছে। ১০০১ দিন পরে ও বাড়ি ফিরল।” প্রসঙ্গত, ২০১৯ এবং ২০২০ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম মনোনীত হয়েছিল।
[আরও পড়ুন : ‘ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছে’, টুইটারের শীর্ষকর্তাদের হুঁশিয়ারি কেন্দ্রের, হতে পারে গ্রেপ্তারিও]
সৌদিতে মহিলাদের গাড়ি চালানোর অধিকার হোক কিংবা আরও ব্যাপক অর্থে পুরুষের নিয়ন্ত্রণ থেকে তাঁদের মুক্তির দাবি হোক, এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ লুইজেন। আন্দোলন এতটাই সাড়া ফেলেছিল যে, পরবর্তী সময়ে মহিলাদের গাড়ি চালানোর অধিকার দিতে কার্যত বাধ্য প্রশাসন। যদিও ততদিনে লুইজেন জেলে। এক সূত্রের দাবি, জেলে তাঁকে ভয়ানক অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তদন্তকারীরা তাঁর প্রতি যৌন অত্যাচার করতেন। তাঁকে জোর করে পর্নোগ্রাফিও দেখানো হত। এহেন অমানবিক বীভৎস অত্যাচারের বিরুদ্ধে অনেকেই তীব্র প্রতিবাদে সরব হন। অবশেষে মিলল সুখবর।
[আরও পড়ুন : প্যাংগং হ্রদ থেকে সেনা সরাচ্ছে ভারত-চিন, সংসদে জানালেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং]
তবে জেল থেকে ছাড়া পেলেও এখনও পুরোপুরি মুক্ত নন লুইজেন। পাঁচ বছরের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাঁর উপরে। এই সময়ের মধ্যে দেশ ছাড়তে পারবেন না তিনি। বোন লিনার কথায়, ”লুইজেন বাড়িতে ফিরলেও তিনি পুরোপুরি মুক্ত নন। লড়াই এখনও শেষ হয়নি।”