সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে কথা যত হয়, কাজ তার বিন্দুমাত্র হয় না। একথা এখন দিনের আলোর মতো সত্যি। প্রতিবছর জলবায়ু সম্মেলনে শুধুই প্রতিশ্রুতির ফোয়ারা ছোটান রাষ্ট্রপ্রধানরা। কার্যক্ষেত্রে সবই ব্যর্থ। তা নইলে বছর বছর পরিবেশের অবস্থা উত্তরোত্তর অবনতির দিকে যায়? কেন উষ্ণতার লাগামছাড়া বাড়বাড়ন্তে হ্রাস টানা যায় না? আর তার অব্যর্থ ফলাফল হিসেবে আমরা আরও এক 'উষ্ণতর' বর্ষকে স্বাগত জানাতে চলেছি। ২০২৬ সাল পড়ার আগেই বছরভর আবহাওয়া নিয়ে অশনি সংকেত দিলেন বিশেষজ্ঞরা। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬ সালে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা যতটা বৃদ্ধি পেতে চলেছে, তা বিপদসীমা থেকে মাত্র এক পা দূরে!
বিন্দু বিন্দু জমে সিন্ধু হয় - এই ইতিবাচকতা সব ক্ষেত্রে সত্য নয়। বিশেষত তাপমাত্রা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটু একটু বাড়বাড়ন্ত থেকেই একসময়ে বিস্ফোরক হয়ে ওঠে। সেই কবে থেকে সামান্যতম উষ্ণতা বাড়তে বাড়তে এমন একটা পর্যায় পৌঁছেছে, যেখান থেকে আর নিয়ন্ত্রণের উপায় প্রায় নেই। হিসেবনিকেশ করে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গড় উষ্ণতা ১.৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পর্যন্ত বাড়লেই নেমে আসবে মহা বিপদ। ২০২৬ সালে সেই অঙ্ক ছুঁয়ে ফেলবে ১.৪ ডিগ্রি! দশমিকের অঙ্ক কী ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এক্ষেত্রে, তা বোঝাই যাচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, বিশ্বের গড় উষ্ণতা ১.৩ ডিগ্রি থেকে বেড়ে ১.৪ ডিগ্রি হওয়া নেহাৎই যোগবিয়োগের হিসেবমাত্র, এত বিপদের বীভৎসতা তেমন ঠাহর করা যায় না। গত তিন বছর থেকে এই বৃদ্ধির দ্রুত হারেই লুকিয়ে অশনি সংকেত। আবহাওয়ার চরম সময় শুরু হয়েছে তখন থেকেই। অর্থাৎ তীব্র গরম পড়া মানে সারাবছর একইরকম গরম, আবার বৃষ্টি শুরু হল তো অবিরাম তা চলছেই, আবার কোথাও শুষ্ক-রুক্ষ্মতাই সদা বিরাজমান। এটাই হল উষ্ণায়ন চরমে পৌঁছনোর একেকটা ইঙ্গিত। আশঙ্কার কথা এই যে, এর সুদূরপ্রসারী প্রভাবে কোথাও কোথাও গোটা বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়তে পারে, হারিয়ে যেতে পারে জীববৈচিত্র্য। সবমিলিয়ে পৃথিবীর সমস্ত নিয়মশৃঙ্খলার বাঁধন ছিঁড়ে তুমুল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি হওয়া হয়ত আর রুখে দেওয়া সম্ভব নয়। আনন্দের সঙ্গে নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি আশু বিপদের কথাও স্মরণে রাখতে হবে বইকী আমাদের।
