সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকাশে একেবারে তোলপাড়! সৌরমণ্ডলীর এতদিনকার চিরাচরিত সমস্ত কার্যকারণ, নিয়মশৃঙ্খলা একলহমায় ভেঙে পড়ছে যেন! পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহের আরও তপ্ত হতে চলেছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে। কী এমন ঘটল হঠাৎ? আমেরিকার ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা NOAA-এর বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সূর্যে বড়সড় ছিদ্র তৈরি হয়েছে, যার অবস্থান একেবারে পৃথিবীর মুখোমুখি। সেই ছিদ্রপথে অবিরল নির্গত হচ্ছে এক্স রে, অতিবেগুনি রশ্মি। সরাসরি তা পৃথিবীতে প্রভাব ফেলতে চলেছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পৃথিবীর তাপবৃদ্ধির গ্রাফ বদলে যেতে পারে। এমনই অশনি সংকেত শোনালেন NOAA-র বিজ্ঞানীমহল।
আসলে 'করোনাল হোল' বা সূর্যের ছিদ্র সৌরমণ্ডলের একটি স্বাভাবিক ঘটনা। উচ্চতাপ, উচ্চশক্তিসমৃদ্ধ এক নক্ষত্রের শুধু কেন্দ্রই নয়, তার পরিধি থেকেও সর্বদা আগুনের হলকা নির্গত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ে গোটা সৌরমণ্ডলে। পৃথিবী যেহেতু সূর্যের আলোকশক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব সবচেয়ে বেশি, তাই তার ভিতরকার পরিবর্তনের প্রতিটি খুঁটিনাটির দিকে নজর থাকে বিজ্ঞানীদের।
সৌরবক্ষে ছিদ্র যে কোনও সময় যে কোনও মুহূর্তে হতে পারে। তা সাধারণত সীমাবদ্ধ হয়। প্রভাবও সীমিত হয়, বড়জোর সপ্তাহখানেকের। তবে সম্প্রতি NOAA-র বিজ্ঞানীরা এক্স রে পরীক্ষায় দেখতে পেয়েছেন, সূর্যের শরীরে এই ছিদ্র বেশ বড় আকার নিয়েছে। হু হু করে তপ্তশিখা ছড়াচ্ছে সেখান থেকে। যাকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, তুলনামূলকভাবে দ্রুতগতির প্রবাহ। সতর্ক করেছেন যে ২৫ জুন, এই প্রবাহের জেরে সূর্যের চারপাশে তীব্র তড়িৎচুম্বকীয় ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।
মূলত সূর্যের দুই মেরু অঞ্চলে এধরনের ছিদ্র দেখা যায়। কারণ মেরুদ্বয়ের তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্র পুরোপুরি উন্মুক্ত। এখান থেকে অগ্নিশিখার তীব্র গতি সৌরঝড়ের আকার নেয়, যার প্রভাব পড়ে পৃথিবীতেও। তবে এক্স রে পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, কেন্দ্রের ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলেও এমনটা দেখা যায়। আর সেই ছিদ্রই দ্রুতগতির তরঙ্গ বিকিরণ করে। পৃথিবীর এক স্যাটেলাইটে ধরা পড়েছে, গত ৩১ মে এমনই এক সৌরঝড় প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে চলেছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, সূর্যের যে ছিদ্রটি নিয়ে এত মাথাব্যথা বিজ্ঞানীদের, তার অবস্থান একেবারে পৃথিবীর মুখোমুখি। তাই বিপদের আশঙ্কাও বেশি।