সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু প্রকৃতির অভিশাপ নয়। বন্যপ্রাণীদের বিলুপ্তির জন্য অনেকাংশেই দায়ী মানুষের সশস্ত্র সংগ্রাম (Armed conflict)। সম্প্রতি প্রকৃতি সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা এক সংস্থার সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। এর মধ্যে গরিলাকে (Gorilla) নিয়ে উদ্বেগ সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি এমনই আরও ২০০টি প্রাণীর বিলুপ্ত হতে চলার নেপথ্যে এই কারণকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। একদিকে যেমন অরণ্য ধ্বংসের মতো কারণ বন্যপ্রাণীদের বিপন্নতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে, অপরদিকে, জঙ্গলে গা ঢাকা দিয়ে গেরিলাযুদ্ধে শামিল আন্দোলকারীদের সশস্ত্র সংগ্রাম – জোড়া ফলায় সবচেয়ে বিদ্ধ গরিলা প্রজাতি।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থার সমীক্ষা বলছে, গরিলা ছাড়া ২১৯ টি প্রজাতিও একই কারণে বিপদের মুখোমুখি। বলা হচ্ছে, এ ধরনের সশস্ত্র সংগ্রাম শুধু মানুষের প্রাণহানিই ঘটায় না, প্রকৃতির উপরও এ এক মারাত্মক অত্যাচার। যার ফল ভুগতে হয় বন্যপ্রাণীদের। প্রায় ৭০০০টি ঘটনার উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছে সংস্থাটি। সাহারা মরুভূমি সংলগ্ন এলাকা অর্থাৎ পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকায় (Africa) এই সমস্যা অধিক। প্রায় ৩০ হাজার প্রাণী ও উদ্ভিদ বিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই তালিকা খতিয়ে দেখেই বিশেষজ্ঞরা দেখছেন, কঙ্গো, রোয়ান্ডা, উগান্ডা – এই তিন দেশে গরিলারাই সবচেয়ে বেশি সংকটে। জঙ্গলের অন্দরে অর্থাৎ যেখানে পরিবার নিয়ে এদের বাস, সেসব জায়গাতেও এখন মানুষের প্রবেশ ঘটছে। অরণ্যের আড়ালে চলে সশস্ত্র সংগ্রামও।
[আরও পড়ুন: বিশালদেহী ফুল থেকে দুর্গন্ধ! কৌতূহল, আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বর্ধমানবাসী]
পরিসংখ্যান দিয়ে IUCN জানাচ্ছে, জঙ্গলের কোর এরিয়ার ১৫ শতাংশ এদের জন্য সংরক্ষিত। কিন্তু ৩ শতাংশ এলাকায় মিলিশিয়া বা জঙ্গিরা গেরিলাযুদ্ধে চালায়। সংরক্ষণ, ভারসাম্য বজায় রাখার মধ্যে দিয়ে প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে বন্যপ্রাণদের সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। সংস্থার পরিবেশবিদ, সমাজ বিশেষজ্ঞ কার্স্টেন ওয়াকার এই কথা জানাচ্ছেন। তাঁর মতে, এ ধরনের যুদ্ধ থামাতে না পারলে মনুষ্যপ্রজাতি নয়, তাদের চেয়ে অনেক বেশি বিপদের মুখে পড়বে গরিলা জাতীয় প্রাণীর দল। তবে মানুষে-মানুষে লড়াইয়ে যে বন্যপ্রাণীরা এভাবে সংকটের মুখে পড়তে, তা কিন্তু এই সংস্থার সমীক্ষার আগে বোঝাই যায়নি। এটাই বোধহয় তাদের প্রতি উদাসীনতার সবচেয়ে বড় নজির।