শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: গরুমারা জাতীয় উদ্যানে সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, একশৃঙ্গ গণ্ডারের সংখ্যা বেড়েছে। এখন ৫৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬১। একইসঙ্গে বেড়েছে হাতি, বাইসন, হরিণ-সহ তৃণভোজী প্রাণীর সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে তৃণভোজীদের খাদ্যভাণ্ডারের ভারসাম্য ঠিক রাখতে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে ঘাস জমির পরিমাণ বাড়াতে পদক্ষেপ নিচ্ছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে উদ্যানের ৬০ হেক্টর জমি তৃণভোজীদের নতুন খাদ্যভাণ্ডারের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।
বর্ষার মরশুমে সেই জমিতে তৃণভোজী প্রাণীদের জন্য রোপন করা হবে ঘাস। গণ্ডারদের পছন্দের ঘাস হিসাবে তালিকায় রয়েছে ঢাড্ডা, মালসা, চেপটি, পুরন্ডি, মালসা, মধুয়া ঘাস। একইসঙ্গে হাতিদের পছন্দের কাঁঠাল, খয়ের, আমলকি-সহ একাধিক রকমের ফলের গাছ ও লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, তৃণভোজীরাই খাদ্যশৃঙ্খলের ধারক। তাদের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে মাংসাশী প্রাণীরা। এই শৃঙ্খল বহাল তবিয়তে থাকলে বনের প্রাণীদের খাদ্যের প্রয়োজনে লোকালয়ে হানাদারির ঘটনাও অনেকটাই কমবে বলে দাবি বন কর্তাদের।
গরুমারা জঙ্গলে হাতি, গণ্ডারের সংখ্যা বাড়ছে।
গরুমারা জাতীয় উদ্যানে হাতি, গণ্ডারদের পাশাপাশি রয়েছে পাঁচ প্রজাতির হরিণ এবং বাইসন। আলাদা করে গণনা না হলেও বনকর্মীদের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট বলছে, পাঁচশোর বেশি বাইসন রয়েছে গরুমারার জঙ্গলে। গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক রাজীব দে জানান, জঙ্গলে তৃণভোজী প্রাণীদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে। যেহেতু প্রতিবছরই প্রাণীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই কারণে খাদ্যভাণ্ডারে যাতে কোনওভাবে টান না পড়ে, তার জন্য আগাম পদক্ষেপ নিয়ে রাখছেন তাঁরা। গরুমারার জঙ্গলে হাতি, বাইসন, হরিণ, গণ্ডারদের বিচরণের পছন্দের জায়গা খুনিয়া, মেদলা, ধূপঝোড়া এলাকায় প্রাণীদের খাদ্যভূমির পরিমাণ বাড়ানো হবে।
ইতিমধ্যেই কোথায়, কত জমিতে তৃণভোজীদের পছন্দের ঘাস ও গাছ লাগানো হবে তার তালিকাও তৈরি। জানা গিয়েছে, এক হেক্টর জমিতে ঘাস চাষ করতে চল্লিশ হাজার টাকা খরচ দাঁড়াবে। ইতিমধ্যেই পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এলে জুলাই মাস থেকে ঘাস রোপণ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
