shono
Advertisement

খেয়ে ফেলে দেওয়া ফলের বীজ জমিয়েই শহরের বুকে গড়ে উঠছে অরণ্য

কলকাতার বুকে চেতলায় গড়ে উঠেছে এই অরণ্য।
Posted: 11:36 AM Jun 06, 2022Updated: 01:46 PM Jun 06, 2022

গৌতম ব্রহ্ম: রমজানে জমানো ফলের বীজে মাথা তুলছে অরণ্য। মাঝেরহাট থেকে জোকা, আমতলা থেকে ভাঙড়, এমনকী সুদূর কাশ্মীর, বাংলাদেশেও কামাল করেছে এই ‘বীজমন্ত্র’। বাড়ছে ‘শহুরে’ অরণ্যের পরিধি। কখনও রাস্তার ধারে, নদীর চরে বা পাহাড়ি উপত্যকায়।এই অভিনব সবুজ বিপ্লবের নেপথ্যে একজন স্কুলশিক্ষক। পিনাকী গুহ খাসনবিশ।

Advertisement

আমতলা থেকে দেড় কিমি দূরে বারুইপুর রোডের উপর পিরতলা হাইস্কুল। এখানেই বাংলা ও সংস্কৃত পড়ান পিনাকীবাবু। তাঁর বীজ জমানোর (Seed Collection) বীজমন্ত্রই এখন ছাত্রদের মধ্যে ভাইরাল। বছরভর এখন ছাত্ররা বীজ জমায়। বর্ষা এলে সেই বীজ ছড়িয়ে দেয়। শহুরে মাটিতে তার থেকেই মাথা তোলে জঙ্গল।

২০১৯ সালে পিনাকীবাবু প্রথম চেতলা জঙ্গলের কথা জানতে পারেন। জানতে পারেন, মন্টু হাইত নামে এক উকিলবাবু মাঝেরহাটে জঙ্গল তৈরি করে ফেলেছেন। পিনাকীবাবু জানালেন, “ওইখানেই প্রথম ছাত্রদের নিয়ে ফলের বীজ ছড়াই। মন্টুবাবুর থেকে গেরিলা কায়দায় জঙ্গল তৈরির কৌশল রপ্ত করি। রমজানে খাওয়া ফলের বীজ জমানোর আইডিয়া অবশ্য এক ছাত্র সরফরাজ শেখের। ক্লাস এইটের ওই ছাত্র ও তার সহপাঠী আকিদ হুসেন রমজানে খাওয়া ফলের বীজ জমাতে শুরু করে।”

[আরও পড়ুন: মঙ্গলে সর্বনাশা ধুলোঝড়ের প্রকৃতি বিশ্লেষণ বিজ্ঞানীরা, ক্ষতি নাসার যান পার্সিভিয়ারেন্সের]

২০১৯ সালে মাঝেরহাটের চেতলার জঙ্গলে (Kolkata Forest) সেই বীজ ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা থেকে ইতিমধ্যেই বহু চারা শিশু থেকে কৈশোরে পা দিয়েছে। খুশি মন্টুবাবু। জানালেন, “পিনাকীবাবুদের মতো আরও শিক্ষককে এই অরণ্য সৃজন যজ্ঞে চাই। স্কুলগুলি এই সবুজ বিপ্লবে যোগ দিলে তবেই সার্থকতা আসবে।”

উল্লেখ্য, মাঝেরহাট থেকে নিউ আলিপুর স্টেশনের মাঝে পোর্ট ট্রাস্টের পড়ে থাকা প্রায় ১ কিমি দীর্ঘ জায়গায় ২০০৫ সালে গেরিলা কায়দায় বীজ ছড়িয়ে আস্ত একটি জঙ্গল তৈরি ফেলেন মন্টুবাবু। সেখানেই বীজমন্ত্রের প্রয়োগ করেন পিনাকীবাবু। তৈরি হয় ফলের গাছের বীজতলা।

করোনা দমাতে পারেনি মাস্টারমশাইকে। জোকা ডায়মন্ড পার্কে বাড়ির পাশেই রাস্তার দু’ধারে, পার্কের লাগোয়া জমিতে বর্ষার শুরুতেই ছড়িয়ে দিয়েছেন জমিয়ে রাখা বীজ। আম, জাম, লিচু, কাঁঠাল , পেঁপে, আতা, বেদানা–আরও কত কী। পিনাকীবাবু জানালেন, ফল খাওয়ার পর বীজগুলি ভাল করে ধুয়ে রোদে শুকোতে হবে। তারপর খাটের নিচে বা কোনও অন্ধকার জায়গায় রেখে দিতে হবে। তাঁর বন্ধু ভাঙড়ে বীজ ছড়িয়েছেন। তিতাসের চরে চারা তৈরি করেছেন বাংলাদেশের এক পক্ষীবিশারদ আসিফ সাজিল।

[আরও পড়ুন: গ্রিনহাউস গ্যাসের অভিশাপ! বাড়তি উষ্ণতায় শুকিয়েছিল মঙ্গলের নদী, দাবি নয়া গবেষণায়

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement