সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিবেশী গ্রহে জলের অস্তিত্ব নিয়ে আশা আরও উসকে উঠল। নাসার মঙ্গলযান পারসিভিয়ারেন্সের পাঠানো ছবি দেখে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত বিজ্ঞানীরা। সেসব ছবি টুইটারে শেয়ারও করেছে নাসা (NASA)। মঙ্গলের (Mars) কিছু পাথরের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে। সেই পাথর বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর খাঁজে খাঁজেই জল বয়ে গিয়েছিল একটা সময়ে। এখন তা শুকিয়ে খটখটে। চিহ্ন বয়ে রেখেছে শুধু পাথর। সেই শিলার ছবিই পৃথিবীতে পাঠিয়ে লালগ্রহ সম্পর্কে আমজনতার কৌতুহল আরও বাড়িয়ে তুলল পারসিভিয়ারেন্স (Perseverance)।
সে প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন বছর আগেকার কথা। মঙ্গল গ্রহ তখন একটা সন্ধিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়ায় ধীরে ধীরে বদল আসছে। ঘনঘন বান লালগ্রহের মাটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে। তারও আগে এখানে বয়ে যেত নদীর তিরতিরে ফল্গুধারা। তার গতিপথের নানা পর্যায়ও ছিল, ছিল বদ্বীপও। কিন্তু কালের নিয়মে তা হারিয়ে গিয়েছে। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, লালগ্রহের মাটিতে শক্ত, বড় বড় পাথর বাঁধের কাজ করত। কিন্তু একটা সময় নদীর তীব্র স্রোতে সেসবও ভেঙে পড়ে। সমতলে আরও শক্তপোক্ত পাথরে রূপান্তরিত হয় তা। বিশেষজ্ঞদের মতে, লালগ্রহ আসলে তরলের বিভিন্ন পর্যায়ের বদলের সাক্ষী। যাকে বলা হচ্ছে হাইড্রোলজিক্যাল সাইকেল (hydrological cycle)।
[আরও পড়ুন: গ্রহাণু নাকি ধূমকেতু? পৃথিবীকে ঘিরে পাক খাচ্ছে কোন রহস্যময় বস্তু? উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত বিজ্ঞানীরা]
এতশত পরিবর্তনের পর মঙ্গল এসে দাঁড়িয়েছে আজকের চেহারায়। ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের Atmospheric and Planetary Sciences বিভাগের অধ্যাপক বেঞ্জামিন ওয়েইস বলেন, ”একেকটি ছবি ভালভাবে দেখলে বোঝা যাচ্ছে, এলাকাটা মূলত মরু অঞ্চল। এখানে এক ফোঁটা জলও থাকার কথা নয়। তবে তা সত্ত্বেও আমরা এর মধ্যে আশা দেখছি। এর অতীত বোঝার চেষ্টা করছি। এই গ্রহে ব্যাপক বদল ঘটে গিয়েছে।” মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটার অঞ্চলেই এই পরিবর্তনের চিহ্ন স্পষ্ট। গত ফেব্রুয়ারিতে নাসার রোভার পারসিভিয়ারেন্স পাঠানো হয়েছিল মঙ্গলে। সেই রোভারই ঘুরে ঘুরে ছবি পাঠাচ্ছে নাসার কন্ট্রোল রুমে। তা নিয়ে গবেষণা চলছে জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে (JPL)। আর প্রতি মুহূর্তে তা দেখে বিস্ময়ের শেষ নেই বিজ্ঞানীদের।