সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিকূল আবহাওয়া, খাড়া পাথুরে চূড়া এবং অবশ্যই মানসিক যুদ্ধ। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করতে চাইলে টপকাতে হবে এই সব ভয়ংকর চ্যালেঞ্জ। কিন্তু কেবল এগুলোই নয়। আরও একটা বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। যা নতুন নয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে যার প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সেটা আর কিছুই নয়, ভিড়! এভারেস্টে এমনভাবে বেড়েছে পর্বতারোহীদের সংখ্যা, যে সেটাও হয়ে উঠছে বড়সড় সমস্যা।
সাধারণ ভাবে এভারেস্টে অভিযানের সবচেয়ে ভালো সময় মার্চ থেকে মে মাস। আবার সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর, এই সময়টাও আবহাওয়া খুব ভালো থাকে। বছরের এই সময়ে তাই নামে পর্বতারোহীদের ঢল। কিন্তু মনে রাখতে হবে এহেন পরিস্থিতিতেও বিপদ সব সময়ই কিন্তু বসে থাকে ঘাপটি মেরে। যে কোনও সময় শুরু হতে পারে তুষারঝড়। যার জেরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। দৃষ্টিগ্রাহ্যতা শূন্যে পৌঁছতে পারে। এছাড়া 'মাউন্টেন সিকনেস' যে কোনও সময় আচ্ছন্ন করে ফেলতে পারে। এমনকী, এভারেস্টের 'ভয়ংকর' অঞ্চলে পৌঁছনোর আগেই!
[আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের উৎসবে শামিল বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর, ভোট দিয়ে পেলেন বিশেষ সার্টিফিকেট, কেন?]
কিন্তু এবার পরিস্থিতি আরও প্রতিকূল। খুম্বু হিমবাহের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এই বছর মরশুম কার্যতই শুরু হয়েছে এপ্রিলের একেবারে শেষে। অথচ মে শেষ হতে না হতেই অভিযানের পাট চুকিয়ে দেওয়া হবে। ফলে এই সময়েই এভারেস্ট (Mount Everest) জয় সম্পন্ন করতে চাইছেন পর্বতারোহীরা। কাজেই ভিড় এবার যথেষ্ট। একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। গত ১৯ ও ২০ মে- কেবল এই দুদিনেই ১৫০ থেকে ২০০ জন এভারেস্টে পৌঁছেছেন। 'এক্সপ্লোরার্সওয়েব'-এর দাবি তেমনই। কেবল ১৯ মে তারিখেই ১০০ মানুষ এভারেস্ট জয় করেছেন। সোশাল মিডিয়ায় তাকালেই দেখা যাবে এই দুদিনে কত অভিজ্ঞ পর্বতারোহী তাঁদের এভারেস্ট অভিযান নিয়ে পোস্ট করেছেন।
এই প্রবণতা যে ভালো নয়, তা বহুবার বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২৪ সালে অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ব্রিটিশ পর্বতারোহী ড্যানিয়েল পিটারসন ও তাঁর নেপালি গাইড পাস তেনজি শেরপা। গত ২১ মে যে প্রবল ধস নামে তাতেই প্রাণ হারান তাঁরা। আর সেই সময়ই দেখা যায়, ধসের আগে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় যাওয়ার পথে বরফাবৃত পথে মানুষের ভিড়! দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। এই প্রবণতাই ভয় দেখাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের। সকলকেই সতর্ক করছেন তাঁরা। কিন্তু পর্বতারোহীরা কি বুঝবেন? নাহলে যে বিপদ আরও বাড়তে পারে! আশঙ্কা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।