দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: শুধু ব্যাঘ্র সংরক্ষণ নয়, বিড়াল প্রজাতির প্রাণীদের সংরক্ষণেও উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যে বাঘরোল (Fishing Cats) বাঁচাতে আনা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। সেই কাজে শুরু হয়েছে গবেষণা। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বাঘ রোল, খটাস জাতীয় প্রাণীদের সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শের’ এতদিন মূলত বাঘ সংরক্ষণের কাজ করত। এবার তারা বাঘরোল বা মেছো বিড়াল জাতীয় প্রাণী সংরক্ষণের বিষয়েও উদ্যোগ নিচ্ছে। ইতিমধ্যেই গ্রামে গ্রামে এই বিষয়ে প্রচার চালানো শুরু হয়েছে। শহর এবং আধা শহরগুলিতেও সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে সব এলাকায় এই ধরনের প্রাণীদের দেখা যায়, যেখানে এদের সঙ্গে মানুষের সংঘাত ঘটছে, সেখানে বন দপ্তরের পাশাপাশি এই সংগঠনের কর্মীরাও মানুষকে সচেতন করার কাজ শুরু করছেন।
[আরও পড়ুন: প্রয়াত দেশের প্রবীণতম সাংসদ, ভুগছিলেন বয়সজনিত অসুখে]
এই বিষয়ে বাঘ তথা বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুণ্ডু বলেন, ‘বাঘ, হাতি, গণ্ডারের সংরক্ষণ সর্বত্র হচ্ছে। কিন্তু বাঘরোল বা মেছো বিড়াল কিংবা খটাস যাই বলি না কেন, এদের সংরক্ষণ সেভাবে হচ্ছে না। মানুষের মধ্যে এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরি না হওয়ায় অনেকে এদেরকে হত্যা করছেন। বাস্তুতন্ত্রে এর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। এই বন্য জন্তুদের সংরক্ষণ করতে হবে। সংবাদ মাধ্যমকেও এই বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে।’
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, চারিদিকে কমছে জলাভূমি। এর ফলে বাঘরোলের মতো প্রাণীরা বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এদের খাদ্য ও বাসস্থানের অভাব দেখা দিচ্ছে। এর উপর পিটিয়ে মারার মতো ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রে বনদপ্তর পৌঁছানোর আগে লোপাট হচ্ছে দেহ। এর পরেও কেবল সুন্দরবন নয়, কলকাতা শহর সংলগ্ন এলাকাতেও বাঘরোল, খটাস, মেছো বিড়াল দেখা যায়। তবে ‘উন্নয়নে’র বলি হচ্ছে এরা। জলাভূমি কমে আসছে শহরে, বাড়ছে আবাসন, ঝকঝকে রাস্তাঘাট। সব মিলিয়ে বিপন্ন হচ্ছে ‘ক্যাট’ প্রজাতি প্রাণী। রাজ্য সরকারের তরফে এই সমস্ত প্রাণীদের রক্ষা করারই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মধ্যবিত্তের পাশে থাকার বার্তা, ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি মোদির]
সরকারের নির্দেশে কাজে নেমেছে একাধিক বেসরকারি সংস্থা। ইতিমধ্যে গবেষণা শুরু হয়েছে মেছো বিড়াল নিয়ে। যা আগামী দিনে তাদের সংরক্ষণের সহায়ক হবে। সুন্দরবনে সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, প্রায় তিন শতাধিক মেছো বিড়াল আছে সেখানে। এরা সুন্দরবনের অরণ্যে বসবাস করে। এর বাইরে লোকালয়ের কাছাকাছি এলাকাতেও থাকে বিড়ালের বিভিন্ন প্রজাতি। ওই এলাকাগুলির প্রাণীদের সংরক্ষণে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।