সংবাদ প্রতিদিনি ডিজিটাল ডেস্ক: শুধু কথা বলে না। গাছেরা (Tree) ‘আর্তনাদ’ও করে। এবার সেই সত্যিই ধরা পড়ল বিজ্ঞানীদের গবেষণায়। ‘রেকর্ড’ হল সেই শব্দও। আলট্রাসোনিক ফ্রিকোয়েন্সিতে। এমনিতে মৃদু, অনেকটা ‘ক্লিক’ শব্দের মতো। তবে এই প্রথম গাছেদের ‘আর্তনাদ’ রেকর্ড করতে সক্ষম হলেন বিজ্ঞানীরা। জানা গেল, যখন শিকড় সমেত উপড়ে ফেলা হয়, তখনই ‘আর্তনাদ’ করে ওঠে উদ্ভিদ! ‘স্ট্রেস’ থেকেই হয় এই অভিব্যক্তি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মূলত ফসল কাটার সময় ‘আর্তনাদ’ করে উদ্ভিদ। আর এই প্রথম সেই শব্দ রেকর্ড হয়েছে বলে দাবি করলেন ইজরায়েলের (Israel) তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের দাবি, এই ‘আর্তনাদ’-এর মাধ্যমেই একে অন্যের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখে উদ্ভিদকুল। ভাগ্যিস বিশ্বখ্যাত বঙ্গ বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু গাছের প্রাণ পেয়েছিলেন। তার উপর দাঁড়িয়েই তো এতদূর এগোল উদ্ভিদ (Botany) নিয়ে গবেষণা।
গবেষকদলের অন্যতম, তেল আভিভ (Tel Aviv) বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভলিউশনারি বায়োলজিস্ট লিলাচ হ্যাডানির বক্তব্য, ‘‘চারপাশ নিস্তব্ধ থাকলেও উদ্ভিদ থেকে ভেসে আসা এই শব্দ শোনা যায়। শুধু মানুষ কেন, চাইলে পশুরাও এই শব্দ শুনতে পারে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কোনও কীট-পতঙ্গ বা পশুপাখির সঙ্গেও গাছেরা সংযোগ স্থাপন করে। তখনও শব্দ উৎপন্ন হয়। আসলে শব্দের মাধ্যমেই সংযোগ স্থাপিত হয়।’’ বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ফসল কাটার সময় কিংবা শিকড় থেকে গাছ উপড়ে ফেলার সময় গাছেরাও ‘স্ট্রেস’ (Stress) অনুভব করে। আর সেই চাপ থেকেই তারা আর্তনাদ (Scream) করে।
[আরও পড়ুন: বাম জমানার কেলেঙ্কারি তুলতেই বাধা কুণালকে]
তবে শুধু শব্দ করা নয়। আরও অনেক রকমভাবেই গাছেরা নিজেদের ‘স্ট্রেস’-এর কথা জানান দেয়। তার মধ্যেই অন্যতম হল বিশেষ গন্ধের (Smell) নিঃসরণ। এছাড়া গাছের পাতা-ফুলের রং পরিবর্তনও অন্যতম। তবে ‘স্ট্রেস’ না থাকলে গাছেরা কোনও শব্দই করে না। হ্যাডানির দাবি, তাঁরা টমাটো এবং তামাক গাছের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা করেছিলেন। ‘স্ট্রেস’-এ থাকলে তারা কীভাবে শব্দ করে, তা রেকর্ড করার চেষ্টা করেছিলেন। কিছু গাছ কেটে শিকড়-সহ ফেলা হয়েছিল। আর কিছুতে দীর্ঘদিন জল দেওয়া হয়নি। তার পর মেশিন লার্নিং অ্যালগোরিদমের সাহায্যে ‘আর্তনাদ’ রেকর্ড করা হয়। এই পরীক্ষাটি হয়েছিল ২০২৩ সালে। তবে ফলাফল সামনে এসেছে সম্প্রতি। ‘সায়েন্স ডিরেক্ট’-কে এই কথাই জানিয়েছে বিজ্ঞানীদের দলটি।