সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই বিপুল ব্রহ্মাণ্ডে কি কেবল পৃথিবীতেই একমাত্র রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব? সেই কবে থেকে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে চলেছে মানুষ। সৌরজগৎ ও সৌরজগতের বাইরে ছায়াপথের (Galaxy) নানা প্রান্তে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এবার এমন দু’টি ছায়াপথের জোটকে খুঁজে পেলেন তাঁরা, যেখানে রয়েছে জলের অস্তিত্ব! রয়েছে কার্বন মনোক্সাইডও। এই আবিষ্কারে উৎফুল্ল বিজ্ঞানীরা। তবে তা সত্ত্বেও ওই জল থেকে প্রাণের অস্তিত্বের কোনও আশা করছেন না তাঁরা।
কারা খুঁজে পেল ওই ছায়াপথ? দক্ষিণ আমেরিকার আটাকামা মরুভূমিতে স্থাপিত ৬৬টি রেডিও টেলিস্কোপের সমষ্টি ‘আটাকামা লার্জ মিলিমিটার অ্যারে’ তথা আলমা রেডিও টেলিস্কোপের লেন্সে ধরা পড়েছে সেই সুদূরের দৃশ্য। কত দূর? ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নালে’ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে এই আবিষ্কারের কথা। তাতে বলা হয়েছে, SPT0311-58 নামের ওই ছায়াপথটি আসলে দু’টি ছায়াপথের সমষ্টি। তারা পরস্পরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। সেটি ১২.৮৮ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে। অর্থাৎ ১ হাজার ২৮৮ কোটি আলোকবর্ষ দূরে। দূরত্বের হিসেব থেকে পরিষ্কার তারা কতটা দূরে অবস্থিত।
[আরও পড়ুন: শৌচালয় খারাপ, ২০ ঘণ্টারও বেশি ডায়াপার পরে বিরক্ত মহাকাশ স্টেশনের চার নভোশ্চর]
তবে এখন নয়, ছবিটি আসলে ২০১৭ সালে তোলা। এরপর থেকে গত কয়েক বছর ধরে তা পর্যবেক্ষণ করেছেন গবেষকরা। গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, যখন এই ব্রহ্মাণ্ডের বয়স ছিল ৭৮০ মিলিয়ন বছর, তখনকার আলোই পৌঁছেছে এবার পৃথিবীর টেলিস্কোপে। দেখা গিয়েছে, সেখানে তখনও তারার জন্ম হয়ে চলেছে।
গবেষক দলের প্রধান জ্যোতির্বিজ্ঞানী শ্রীবাণী জারুগুলা জানিয়েছেন, ওই ছায়াপথের জোটে যে গ্যাসীয় অণুর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে জল ও কার্বন মনোক্সাইডের সন্ধান মিলেছে। তবে তাদের যে গঠনগত অবস্থা তা মোটেই প্রাণধারণের অনুকূল নয়।
সুতরাং এই আবিষ্কার থেকে সুদূর ছায়াপথে প্রাণের অস্তিত্বের আশা নেই। তবুও ব্রহ্মাণ্ডের তরুণ বয়সের এক দৃশ্যের সাক্ষী হতে পেরে খুশি বিজ্ঞানীরা। এই ধরনের আবিষ্কারের ফলেই ব্রহ্মাণ্ডের জন্ম, বৃদ্ধি ও পরিবর্তনের নানা দিক বুঝে ওঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।