সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিপুলা এ পৃথিবীর মাত্র ৩ শতাংশ ভূমি (Land)নাকি এখনও অস্পৃশ্য (unblemished)। তার উপর কেউ অধিকার দাবি করেনি এখনও। সে অর্থে এই ৩ শতাংশ জমি ‘কুমারী’। সম্প্রতি ‘ফ্রন্টিয়ারস’ নামের অরণ্য ও পরিবেশ সংক্রান্ত পত্রিকার প্রতিবেদনে এমনই তথ্য প্রকাশিত হবে। এই তিন শতাংশের হিসেব দেখে তাজ্জব পরিবেশ বিজ্ঞানীরাও। বাকি ৯৭ শতাংশের উপরই যে মানুষ দখলদারি কায়েম করেছে, এই তথ্যই অবাক করেছে তাঁদের। মনে করা হচ্ছে, এটুকু জমিরই বাস্তুতন্ত্র আদিম, অকৃত্রিম রয়ে গিয়েছে। কোনও প্রাণীও এখানে সেভাবে বাসস্থান গড়ে তোলেনি। ফলে কোনও জীববৈচিত্র্যও গড়ে ওঠেনি। তা হোক, তবু এখনও এটুকু ভূমি যে অবিকৃত অবস্থায় আছে, সেটা খানিকটা সন্তোষজনক।
সম্প্রতি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল জীববিজ্ঞানী এ নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর বিলুপ্তি এবং গাছের সংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য বিশদে জানতে গিয়েই উঠে এসেছে এই বিষয়টি। তাতে দেখা গিয়েছে, সাহারা মরুভূমি, গ্রিনল্যান্ড ও কানাডার বেশ কিছু অংশে এখনও হাত পড়েনি কারও। তাই ২০ থেকে ৪০ শতাংশ বাস্তুতন্ত্র একেবারেই অটুট রয়ে গিয়েছে। অবশ্য উলটো ছবিও আছে। আমাজন অরণ্য লাগোয়া এলাকায় ব্যাপক হারে বৃক্ষনিধন করে জনবসতি গড়ে তোলার কারণে বহু জীববৈচিত্র্য (Biodiversity) নষ্টের মুখে পড়েছে।
[আরও পড়ুন: সূর্যের আলোয় লুকিয়ে করোনার মারণবীজ! চাঞ্চল্যকর দাবি গবেষকদের]
এ নিয়ে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু প্লাম্পট্রের কথায়, “৫০০ বছর আগে যা ছিল, তার মাত্র ৩ শতাংশ জমি একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এত কম!এসব জায়গায় মানুষ বা কোনও প্রাণীর পদচিহ্ন পাওয়া যায়নি।” ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী স্টুয়ার্ট পিমের বক্তব্য, ”কেন এসব জায়গা এখনও অবিকৃত রয়েছে, তা বুঝতে হলে প্র্যাকটিক্যাল কয়েকটি পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হবে আমাদের।এভাবে জমি বাঁচিয়ে রাখা কিন্তু জীববৈচিত্র্যের জন্য খুব একটা ভাল নয়। এতে প্রকৃতির কয়েকটা দিক রুদ্ধ হয়ে যায়। তাই পরিবেশ বাঁচানোর পাশাপাশি এই দিকটাও ভেবে দেখতে হবে।” রাষ্ট্রসংঘের তরফে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়েছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ জমি সুরক্ষিত থাকুক। কিন্তু ২০২০ সাল পর্যন্ত দেখা গিয়েছে, ১৭ শতাংশ জমি কোনও না কোনওভাবে সুরক্ষিত। তবে মাত্র ৩ শতাংশ জমি প্রাকৃতিকভাবেই কারও ছোঁয়া পায়নি, এই তথ্য মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়।