সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিন রাতের ধৈর্য আর দীর্ঘদিনের অধ্যবসায় শেষপর্যন্ত দাম পেয়েছে। তিন রাত ধরে পৃথিবীর শুষ্কতম মরুভূমি আটাকামার কাছে এক পাহাড়ের উপর অপেক্ষায় ছিলেন এডুয়ার্ডো বানাডোস। চিলির লাস ক্যাম্পানাস অবজার্ভেটরিতে বসেই এক মহাজাগতিক বিস্ময়ের আবিষ্কার কি চাট্টিখানি কথা! এক অতিকায় অন্ধকূপ, যা ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির সমসাময়িক। বুধবার জার্নাল নেটারে এডুয়ার্ডো ও তাঁর সঙ্গীরা নিজেদের আবিষ্কারের কথা ফলাও করে প্রকাশ করেছে। তাঁদের দাবি, পৃথিবী থেকে ১৩০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে এক অদৃশ্য অন্ধকূপ রয়েছে। যা এক সুবিশাল নক্ষত্রমণ্ডলের ঘূর্ণাবর্তকে গিলে ফেলছে। সূর্যের চেয়ে ৮০০০ লক্ষ গুণ বড় ওই ব্ল্যাকহোল বিস্ময়েরই শামিল। তৃতীয় রাতের শেষে সূর্যোদয়ের সময় ওই ব্ল্যাকহোলটি দেখতে পান এডুয়ার্ডো। আর তাতেই মহাকাশ বিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের সাফল্য মেলে।
[চিনা বায়ুসীমায় ভেঙে পড়েছে ভারতীয় ড্রোন, অভিযোগ বেজিংয়ের]
বানাডোসের এই কীর্তি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। জানা গিয়েছে, সবচেয়ে প্রাচীন এবং দূরের অন্ধকূপ এটি। বানাডোসের বক্তব্য, বিগ ব্যাং-এর পর ৬৯০০ লক্ষ বছর ধরে এই অন্ধকূপটি রয়েছে। একইসঙ্গে এটি আয়তনে বেড়েই চলেছে। ব্রহ্মাণ্ডের অন্ধকার সময়ের অনেক রহস্য নাকি লুকিয়ে রয়েছে এই অন্ধকূপের অন্দরে। আরও সহজ করে বোঝানোর জন্য বানাডোস জানিয়েছেন, ‘যদি ধরা যায় ব্রহ্মাণ্ড ৫০ বছর বয়সি এক মানুষ তাহলে আমরা সেই মানুষের শৈশবের ছবি আবিষ্কার করেছি। যখন তাঁর বয়স ছিল দু-আড়াই বছর।’ বিগ ব্যাং-এর পর কয়েক লক্ষ বছর পর ব্রহ্মাণ্ডের অন্ধকার যুগের শুরুয়াত। ব্রহ্মাণ্ড যখন ধীরে ধীরে ঠান্ডা হয়ে প্রসারিত হচ্ছে তখন হাইড্রোজেন গ্যাসের কুয়াশার আধিক্য বাড়তে শুরু করে। তখন মহাকাশে না ছিল কোনও ছায়াপথ বা নীহারিকা বা কোনও নক্ষত্র। হাইড্রোজেন গ্যাসের ঔজ্জ্বল্যই তখন ভরসা। সেই সময়েই আবির্ভাব এই অন্ধকুপের। বানাডোস ও তাঁর সহকর্মীরা এর নাম দিয়েছেন ULAS J1342+0928।
[জেরুজালেম নিয়ে রক্তগঙ্গা বইবে, হুমকি আল কায়দা ও আইএসের]
ক্যালিফোর্নিয়ার কারনেগি অবজার্ভেটরির বৈজ্ঞানিক বানাডোস গত মার্চ থেকে চিলির ওই অবজার্ভেটরিতে ঘোরাঘুরি করছেন। ছোট ছোট ব্ল্যাকহোলের জন্ম দেয় এমন এক অতিকায় অন্ধকূপের সন্ধানে ছিলেন তিনি। এই আবিষ্কারটি তাঁদের ধারণার থেকেও বিশাল। মজার বিষয় যে, এই অন্ধকূপটি প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। বিজ্ঞানীরা এখনও এই বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে সন্দিহান। তাঁদের মতে, হয়তো এর থেকেও প্রাচীন অন্ধকূপের অস্তিত্ব রয়েছে মহাকাশে।
The post দানবীয় মহাজাগতিক রাক্ষস! ব্রহ্মাণ্ডে খোঁজ মিলল সবচেয়ে ‘প্রবীণ’ অন্ধকূপের appeared first on Sangbad Pratidin.