সংবাদ প্রতিদি ডিজিটাল ডেস্ক: মাঠঘাট, রাস্তায় কিংবা বাড়ির উঠোন বা যে কোনও স্থানে শৌচকর্ম করছে চারপেয়েরা। এটাই পরিচিত দৃশ্য। কিন্তু ওদেরও তো অভ্যেস বদলাতে পারে। শৌচালয়ে (Toilet) গিয়ে মলমূত্র ত্যাগ করছে গরু – এমনটাও দেখবেন হয়ত। গল্পের গরু গাছে ওঠে, আর বাস্তবের গরু চার দেওয়ালে ঘেরা শৌচালয় গিয়ে শৌচকর্মের পর ‘ফ্লাশ’ (flash) করে জায়গা পরিষ্কার করে দিয়ে আসছে। শুনে অবাক হচ্ছেন? কিন্তু এটাই সত্যি। বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল ‘কারেন্ট বায়োলজি’তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এমনটাই জানা গিয়েছে। নিউজিল্যান্ড এবং জার্মানির (Germany) একদল বিজ্ঞানীর যৌথ গবেষণা গরু সম্পর্কে এমনই কিছু তথ্য প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, গরুর মতো প্রাণী আসলে খুব দ্রুত শিখে নিতে পারে। তাই একবার যদি তাদের শৌচালয়ের ব্যবহার ঠিকমতো শেখানো হয়, তাহলে তারা সহজেই করতে পারে।
আসলে গরু (Cow)সম্পর্কিত এই গবেষণার মূলে রয়েছে পরিবেশ দূষণের (Pollution) ধারণা। পরিবেশবিদরা বলছেন, মাঠেঘাটে গোমূত্র, গোবর থেকে মাটি দূষণের প্রবল আশঙ্কা। শুধু তাই নয়, গোবর মাটিতে মিশলে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বাড়ে। তা পরবর্তীকালে গ্রিনহাউস গ্যাসের উৎস হয়ে ওঠে। সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত একটি রিপোর্টেও এই তথ্য উঠে এসেছে। গ্রিনহাউস গ্যাস যেহেতু পরিবেশ দূষণের অন্যতম মূল উৎস, তাই তা কমানোর লক্ষ্যে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালাচ্ছিলেন।
[আরও পড়ুন: Venus: বয়স কমল শুক্রের! নয়া গবেষণায় চাঞ্চল্যকর দাবি বিজ্ঞানীদের]
‘কারেন্ট বায়োলজি’তে প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখে আবার জার্মানির গরুদের এই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তার ফলাফল দেখে অবাক বিজ্ঞানীরাই। দেখা গেল, তাদের জন্য তৈরি লোহার খাঁচা ঘেরা শৌচালয়ে গিয়ে দিব্যি মূত্রত্যাগ করার পর নির্দিষ্ট ফ্লাশে ব্যবহার করে জল দিয়ে সেই জায়গা পরিষ্কার করে দিচ্ছে। আর তা থেকেই স্পষ্ট, গরুর শেখার ক্ষমতা। এই প্রকল্পের এক গবেষকের কথায়, “খেতখামারে গরু, মোষের মতো গবাদি পশুদের মল ও মূত্রত্যাগের জন্য চাষের জমি এবং আলপথ আরও দূষিত হয়। আবার সেই গবাদি পশুরা যদি খেতখামারে শস্য রাখার আস্তানায় মল ও মূত্রত্যাগ করে, তাতে সেগুলি দীর্ঘদিন সেখানে থাকতে থাকতে বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরি করে। এটি গ্রিনহাউস গ্যাস (Green house gas)। তাই আমরা চেয়েছিলাম গবাদি পশুদের শৌচালয়ের ব্যবহারের অভ্যাসে রপ্ত করিয়ে অ্যামোনিয়ার মতো বিষাক্ত গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে।”
[আরও পড়ুন: ‘তোমরা সব বোকা’, অবিকল মানুষের গলায় বলল হাঁস! পুরনো রেকর্ড শুনে চমকে উঠলেন বিজ্ঞানীরা]
আর অভ্যেস বলে অভ্যেস! ঠিক যেভাবে শেখানো হয়েছিল, হুবহু সেই কায়দাতেই গরু ব্যবহার করছে শৌচালয়। জার্মানির ‘রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ফার্ম অ্যানিমাল বায়োলজি’র তরফে একটি ভিডিও প্রকাশ করে তা দেখানো হয়েছে। আর সেই ভিডিও দেখে চমকে উঠছেন সকলে।