সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সার্বিয়ায় ক্রমাগত বাজছে রণদামামা। কসোভোর বিরুদ্ধে সেনা মোতায়েন করেছে বলকান দেশটি। মুহূর্তের মধ্যেই সেখানে জ্বলে উঠতে পারে যুদ্ধের আগুন। এহেন পরিস্থিতিতে বুধবার বেলগ্রেড পৌছন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আর এই সফর নিয়েই তুঙ্গে জল্পনা।
বুধবার সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে পৌঁছন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সুরিনামের পর দু’দিনের সফরসূচীর শেষ পর্যায়ে বলকান দেশটিতে ভারতীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে উঠেন তিনি। মুর্মু বলেন, “শুনেছি সার্বিয়ায় ভারতীয় সিনেমা খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া, ভারতীয় চিত্রনির্মাতাদের কাছে সার্বিয়া খুবই পছন্দের গন্তব্য। ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য যেমন যোগার প্রতি সার্বিয়ার জনগণের আকর্ষণ রয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে এখানে আয়ুর্বেদের প্রসার বেশ ভাল।”
এদিন, রাষ্ট্রপতির সম্মানে বেলগ্রেড এই আলোচনা সভার আয়োজন করেন সার্বিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জীব কোহলি। ওই সভায় দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে নতুন মাত্রা দেওয়াার উপর জোর দেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। সার্বিয়ার শীর্ষ নেতা্দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি বলেও খবর।
[আরও পড়ুন: আটটার মধ্যেই বন্ধ করতে হবে বাজার, বিদ্যুৎ বাঁচাতে নয়া ফতোয়া পাকিস্তানে]
এদিকে, এই সফর নিয়েই তুঙ্গে পৌঁছেছে জল্পনা। কারণ, ইউক্রেনের যুদ্ধের আবহে সংঘাতের দিকে হাঁটছে সার্বিয়া। কসোভোয় বসবাসকারী সংখ্যালঘু সার্বদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ এনে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছে বেলগ্রেড। রয়টার্স সূত্রে খবর, সেনাবাহিনীকে হাই-অ্যালার্টে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার ভুসিচ। শুধু তাই নয়, কসোভো সীমান্তে বিরাট সংখ্যক সেনা পাঠিয়েছেন তিনি। মুহুর্তের নোটিসে হামলা চালাতে সক্ষম সেই বাহিনী বলে খবর।
ইউরোপের ক্ষুদ্র দেশ কসোভোর জনসংখ্যা মাত্র ১৮ লক্ষ্য। নাগরিকদের প্রায় নব্বই শতাংশই আলবানিয়ান মুসলিম। পাঁচ শতাংশ খ্রিস্টান সার্ব। তাদের অভিযোগ, সংখ্যাগুরুদের দখলে রয়েছে প্রশাসন। তাই সংখ্যালঘুদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি, কসোভোর সার্ব অধ্যুষিত জেকান শহরের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বারুদে আগুন লেগেছে। নির্বাচনে জয়ী আলবানিয়ান প্রার্থীকে অফিসে ঢুকতে দিতে নারাজ সার্ব বাসিন্দারা। তা নিয়েই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে প্রতিবাদীদের।
বলে রাখা ভাল, ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করে কসোভো (Kosovo)। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি কসোভোকে স্বীকৃতি দিলেও তা মেনে নেয়নি সার্বিয়া। ফলে বলকান অঞ্চলে সংঘাতের বারুদ মজুত ছিলই। বিগত দেড় দশক থেকে কসোভোয় আমেরিকা ও ইউরোপের মিলিত শান্তিরক্ষা বাহিনী মজুত রয়েছে।
এদিকে, এই গোটা ঘটনার উপর কড়া নজর রাখছে ভারত। কসোভোকে এখনও স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়নি দিল্লি। কূটনীতির সূত্র মেনে, রাশিয়ার বন্ধু সার্বিয়াকে চটাতে চায় না ভারত। একইসঙ্গে, কসোভোর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দিয়ে কাশ্মীর ইস্যুতে ইন্ধন জোগাতে নারাজ নয়াদিল্লি। তবে, ইউক্রেনের পর কসোভোয় যুদ্ধ শুরু পলে আমেরিকা ও পশ্চিমের চাপের মুখে পড়তে হতে পারে মোদি সরকারকে।