সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৯/১১-র পর ফের মার্কিন মাটিতে নৃশংস সন্ত্রাসবাদী হামলা৷ রক্তাক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার অরল্যান্ডো শহর৷ স্থানীয় নাইট ক্লাবে হামলা চালিয়ে অন্তত ৫০ জনকে হত্যা করল ‘স্বঘোষিত’ ইসলামিক স্টেট জঙ্গি ওমর সিদ্দিকি মতিন৷ সোমবার এনবিসি নিউজের কাছে ওমরের পিতা মীর সিদ্দিকি দাবি করেন, “এই ঘটনার সঙ্গে ধর্মীয় কোনও যোগ নেই৷ গোটা বিশ্বের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি৷ ও (ওমর) যে এমনটা করবে, আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি৷ আমরাও আহত৷” হামলায় মর্মাহত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হোয়াইট হাউস থেকে এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এধরণের হামলায় আমেরিকানরা ভয় পেয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে যাবে না৷ বরং তাঁরা একে অপরের পাশে এসে দাঁড়াবে, ভালবাসার হাত বাড়িতে দেবে৷”
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী ইসলামিক স্টেট ওরফে দায়েশ জঙ্গি ওমর সিদ্দিকি৷ ২১ বছরের কলেজ ড্রপ আউট মতিন আদতে আফগান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক৷ হামলার আগে সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকদের জন্য চালু থাকা আপৎকালীন নম্বর ৯১১-তে ফোন করে জানিয়েছিল সে ইসলামিক স্টেটের হয়েই হামলা চালাতে যাচ্ছে৷ সে নিজেকে ইসলামিক স্টেটের প্রতি অনুগত বলে দাবি করেছিল৷ নাইটক্লাবে ঢুকে গুলিবৃষ্টি করতে করতে সে দায়েশ তথা ইসলামিক স্টেটের নামে আরবি ভাষায় জয়ধ্বনি দিচ্ছিল৷ হামলার পর মতিনকে নিজেদের বিশ্বস্ত মুজাহিদ বলে দাবি করে ইসলামিক স্টেটের নিজস্ব সংবাদ সংস্থা ‘আমাক নিউজ এজেন্সি’৷ তারা নাইট ক্লাবের হামলার দায় স্বীকার করে৷ এরপরই ফেসবুক, টুইটারে হামলার জন্য মতিনকে অভিনন্দন জানিয়ে টুইট ও ছবি পোস্ট করে ইসলামিক স্টেটের ফলোয়াররা৷ তারা কেউ কেউ মন্তব্য করে, রমজান মাসে আমেরিকানদের জন্য এটা ইসলামিক স্টেটের উপহার৷
অ্যাসল্ট রাইফেল ও হ্যান্ডগান থেকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় ওমর৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্হলে নিহত হন ৫০ জন৷ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও ৫৩ জন৷ জখমদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ ফলে বাড়তে পারে নিহতের সংখ্যা৷ অরল্যান্ডো পুলিশ জানিয়েছে, শহরের বিখ্যাত নাইট ক্লাব হল ‘পাল্স’৷ এটি মূলত সমকামীদের নাইটক্লাব৷ সমকামী, রূপান্তরকামী ও তৃতীয় লিঙ্গের নানা বয়সের নাগরিকরা এখানে ভিড় করে থাকেন৷ রোজকার মতো শনিবার সন্ধেতে পার্টি শুরু হয়েছিল ক্লাবটিতে৷ উইক এন্ডে নাইটক্লাব ছিল জমজমাট৷ হঠাৎই কালো পোশাক পরা ওমর দু’ হাতে দু’টি বন্দুক নিয়ে গুলি চালাতে চালাতে হলিউডি সিনেমার কায়দায় নাইটক্লাবে ঢোকে৷ ভিতরে যাঁরা আলো আঁধারিতে ডান্স পার্টিতে মত্ত ছিলেন, তাঁরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসবাদীর এলোপাথাড়ি গুলিতে লুটিয়ে পড়েন৷ হামলার রেশ কাটিয়ে উঠে প্রায় ৫০-৬০ জন সদস্য ক্লাব থেকে পালাতে সক্ষম হলেও জঙ্গির বন্দুকের নিশানায় পড়ে যান অন্তত ৩০-৪০ জন৷ তাদের পণবন্দি বানায় ওমর৷ হামলার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্হলে পৌঁছয়৷ পুলিশের ‘স্পেশাল ওয়েপনস অ্যান্ড ট্যাকটিক্স’ (সোয়াট) টিম নাইটক্লাব ঘিরে ফেলে৷ সোয়াটের সঙ্গে গুলি যুদ্ধে এঁটে উঠতে পারেনি ওমর৷ পুলিশের গুলিতে নাইটক্লাবেই সে খতম হয়৷ নিহত হন এক সোয়াট অফিসারও৷
The post রক্তস্নাত ফ্লোরিডা: ক্ষমা চাইলেন হামলাকারীর বাবা appeared first on Sangbad Pratidin.