সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একসময় ভারতীয় সিনেমার বিদেশে শুটিং হওয়া চমকপ্রদ ব্যাপার ছিল। তবে দিন এখন বদলেছে। বলিউড ফিল্ম মানেই ইউরোপের নৈসর্গিক দৃশ্যে পরিপূর্ণ। কিন্তু এবার বিদেশি দৃশ্যাবলিও বুঝি একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে! তাই এখন আর পৃথিবীতে নয়, পৃথিবীর বাইরে সিনেমার শুটিং করার ভাবনাচিন্তা চলছে। এই তো সদ্যই স্পেস স্টেশনে (International Space Station) শুটিং সেরে ফিরেছেন রাশিয়ার একদল নভোশ্চর তথা অভিনেতা-অভিনেত্রী। যিনি এমন অসাধ্য সাধন করেছেন, সেই রুশ পরিচালক তথা অভিনেতা ক্লিম শিপেঙ্কো ঘোষণা করলেন, এবার মঙ্গল (Mars), চাঁদেও (Moon) হবে শুটিং।
১২ দিন স্পেস স্টেশনে কাটিয়ে গত সপ্তাহেই পৃথিবীতে ফিরেছে রুশ টিমটি। আর তারপরই শিপেঙ্কোর ঘোষণা, ”আমি মনে করি, মহাকাশ সংক্রান্ত যে কোনও সিনেমার শুটিং (Shooting) মহাকাশেই হওয়া উচিত। যদি চাঁদের উপর কোনও সিনেমা হয় তাহলে চাঁদে শুটিং, মঙ্গল নিয়ে সিনেমা হলে মঙ্গলেই হবে শুটিং। আমরা সেভাবে তৈরি। কেন এসব সিনেমা স্টুডিওতে বসে শুট করা হবে?” সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসবই জানিয়েছেন শিপেঙ্কো। ফলে সেই দিন আর খুব দূরে নয়, যেদিন চাঁদ, মঙ্গলেও যাচ্ছে ফিল্মের কাস্ট অ্যান্ড ক্রু।
[আরও পড়ুন: কেটে গিয়েছে মাস, লাভা উগরেই চলেছে স্পেনের আগ্নেয়গিরি! উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা]
মহাকাশে (Space) বহু অসাধ্য সাধন করেছে মানুষ। কিন্তু সিনেমা তৈরির কথা কেউ ভাবেনি। রাশিয়াই গড়ছে নয়া নজির। প্রথমবার স্পেসএক্স (SpaceX) মহাকাশযানে চেপে আমজনতার শূন্যে পাড়ি দেওয়ার রেকর্ড তৈরি হয়েছিল আগে। আর তারপর নতুন রেকর্ডের লক্ষ্যে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে মস্কো। মোট ১০ জন ছিলেন ওই মহাকাশ স্টেশনে। শুটিং শেষের ঠিক পরপরই অবশ্য দুর্ঘটনার মুখে পড়েন তাঁরা। পৃথিবীতে ফেরার তোড়জোড় করাকালীন সয়ুজ এমএস-১৯’এর ধাক্কায় মহাকাশ স্টেশন প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সরে যায়। রুশ অভিনেত্রী জুলিয়া পেরেসলিড, পরিচালক ও অভিনেতা ক্লিম শিপেঙ্কো ও মহাকাশচারী অভিনেতা ওলেগ নোভিতস্কি-সহ বাকিরা কার্যত কেঁপে ওঠেন।
[আরও পড়ুন: ছায়াপথের কেন্দ্র থেকে ভেসে এল রহস্যময় তরঙ্গ! চাঞ্চল্য বিজ্ঞানী মহলে]
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মহাকাশ স্টেশনে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতার বিস্তারিত জানিয়েছেন শিপেঙ্কো। তিনি বলেন, ”আমি যেভাবে ভেবে গিয়েছিলাম, কয়েকটি দৃশ্য, শুট করতে গিয়ে দেখলাম, তা সম্পূর্ণ আলাদা। মহাশূন্যে দুটি চরিত্র মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারে না। একজন উল্লম্বভাবে থাকে তো অন্যজনকে ঠিক ৯০ ডিগ্রি অবস্থানে থাকতে হচ্ছে। ফলে আমাদের ক্যামেরার অ্যাঙ্গেলও ঠিক ওভাবেই করতে হয়েছে।” তিনি আরও বলছেন, ”আমার কাছে এই বিষয়টা সিনেমা জগতে একটা নয়া আবিষ্কারের মতো।” মহাকাশে শুটিং শেষে সিনেমাটি কবে দেখতে পাবেন দর্শকরা? সেসব অবশ্য জানানো হয়নি এখনও। কোনও স্টুডিও কিংবা সেট তৈরি করে নয়, দর্শকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন, ছবির পর্দায় মহাশূন্য দেখার জন্য।