সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে ফের সন্ত্রাসবাদী হামলা। এবার জঙ্গিদের হাতে প্রাণ হারালেন দুই রোহিঙ্গা নেতা। এই হামলার নেপথ্যে মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’র হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযোগ, জঙ্গি সংগঠনটিকে মদত জোগাচ্ছে পাকিস্তানের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।
মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টা নাগাদ কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে দুই রোহিঙ্গা (Rohingya) নেতাকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। উখিয়া ক্যাম্প ১৫-এর সি ৯ ব্লকের দুর্গম পাহাড়ের ঢালে এই কাণ্ড ঘটে। নিহতরা হলেন ক্যাম্প ১৫ ব্লক সি/১-এর আবদুর রহিমের ছেলে হেড মাঝি (নেতা) আবু তালেব (৪০) ও একই ক্যাম্পের সি/৯-এর ইমাম হোসেনের ছেলে সাব-ব্লক মাঝি (নেতা) সৈয়দ হোসেন (৩৫)। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মহম্মদ কামরান হোসেন জানান, শত্রুতার জের ধরে আট থেকে ১০ জন রোহিঙ্গা দুর্বৃত্ত সৈয়দ হোসেন ও আবু তালেবকে গুলি করে হত্যা করে। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শেখ মহম্মদ আলি বলেন, পুলিশ মরদেহগুলো উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসেন জানান, দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার করতে ক্যাম্পে অভিযান চলছে।
[আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে ‘রক্তের সম্পর্ক’, চিনা বিদেশমন্ত্রীর সফরের পরই বার্তা বাংলাদেশের]
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আবুল কালাম নামের এক রোহিঙ্গা নেতাকে হত্যা করে জঙ্গিরা। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর উখিয়ার লম্বাশিয়া শিবিরে রোহিঙ্গা নেতা মহম্মদ মুহিবুল্লাকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত মুহিবুল্লা প্রত্যাবাসনের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন বলে পরিবার ও পুলিশ জানিয়েছিল। এরপর একই বছরের ২২ অক্টোবর ভোরে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের ১৮ নম্বর ময়নারঘোনা রোহিঙ্গা শিবিরের একটি মাদ্রাসায় একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এতে মাদ্রাসাটির ছাত্র-শিক্ষক-সহ ছয় রোহিঙ্গা শরণার্থীর মৃত্যু হয়।
প্রসঙ্গত, মায়ানমারে (Myanmar) রোহিঙ্গা জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে পাকিস্তানের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি তথা আরসা-কে মদত দিচ্ছে তারা। আর সেই প্রভাব এসে পড়ছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবিরগুলিতে। বিগতদিনে শরণার্থীদের মধ্যে জঙ্গিদের তৎপরতা বেড়েছে বলেও একাধিক রিপোর্টে জানিয়েছে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা সংস্থাগুলি। এহেন পরিস্থিতিতে শরণার্থী শিবিরে ফের রোহিঙ্গা নেতা খুন হওয়ায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন দেশের প্রশাসন ও নিরাপত্তামহল।