shono
Advertisement

Breaking News

শিক্ষাই আলো! ল্যাম্প পোস্টের নিচে পড়াশোনা, ভাইবোনের লড়াইয়ের ছবি ভাইরাল

তাদের সংগ্রাম মনে করিয়ে দিচ্ছে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথা।
Posted: 08:53 PM Feb 25, 2022Updated: 09:45 PM Feb 25, 2022

সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: কখন সন্ধে হবে। আর সন্ধে হলেই রাত আসবে। আর টুক করে জ্বলে উঠবে সামনের রাস্তার পাশে থাকা ল্যাম্প পোস্টের বিজলি বাতি। বিদ্যুতের এই আলো জ্বলে উঠলেই খাটিয়া পেতে দুই ভাইবোনের লেখাপড়া শুরু। এই প্রতিকূলতার মধ্যেও পড়াশোনা চালিয়ে আগামীতে চাকরি করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে দু’জন। স্বপ্ন একটাই, অভাবী সংসারের দুঃখ ঘোচানো। ঝাড়গ্রামের (Jhargram)দুই ভাইবোনের ছবি আপাতত ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়।

Advertisement

বেলপাহাড়ির কাশমার গ্রামে খাটিয়া পেতে ল্যাম্প পোস্টের আলোর নিচে লেখাপড়া করার ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতে (Social Media)। বাঁশপাহাড়ি অঞ্চলের কাশমার গ্রামের হত দরিদ্র পরিবারে দুই সন্তান। একজন ষষ্ঠ, অপরজন সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। বাড়িতে নিত্য অভাব। নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। রেশনে যেটুকু করোসিন তেল মেলে, তা রান্নার জন্য আগুন জ্বালাতে লাগে। খোলা বাজারে চড়া দামে তেল কেনার ক্ষমতা নেই দিন মজুর পরিবারটির। তাই বিদ্যালয়ে পাঠরত দুই ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার জন্য ভরসা একমাত্র ল্যাম্প পোস্টের আলো।

[আরও পড়ুন: যুদ্ধ থামিয়ে আলোচনায় রাজি রাশিয়া-ইউক্রেন দু’পক্ষই! কিন্তু কোন শর্তে?]

কাশমার গ্রামের স্বপন সহিশ ও অঞ্জনা সহিশের এক ছেলে ও এক মেয়ে। বছর চোদ্দর সমীর বাঁকুড়া জেলার খাতড়ার মাশানঝাড় হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেনীর পড়ুয়া। তার বোন সুমিত্রা বেলপাহাড়ির চাকাডোবা জুনিয়র হাইস্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া বলে জানান তাদের মা। বাবা স্বপন শারীরিক নানা সমস্যায় কাজকর্ম করতে পারেন না। মা দিনমজুরি করে কোনওরকমে সংসার চালান। ত্রিপলে ঢাকা ছোট্ট মাটির ঘর। সরকারি প্রকল্পে তারা ঘরবাড়ি পাননি বলে অভিযোগ। রেশনটুকু তাদের মেলে। অর্থের অভাবে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারেননি বলেও জানান অঞ্জনা সহিশ।

ছবি সৌজন্য: ফেসবুক।

এই অবস্থায় তাদের সন্তানরা যাতে আর পাঁচটা বাড়ির ছেলেমেয়েদের মতো লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে, তার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। সেই লড়াইয়ে শামিল ছেলেমেয়েরাও। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়া ওই ছবিতে বিদ্যাসাগরে ল্যাম্প পোস্টের নিচে লেখাপড়া করার কথা মনে করানো হয়েছে। যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি ‘সংবাদ প্রতিদিন’। অঞ্জনা সহিশ বলেন, “আমারা খুবই গরিব। দিন আনি দিন খাই। স্বামী অসুস্থ, কাজ করতে পারেন না। কোনওমতে সংসার চলে আমাদের। কীভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেব? ছেলেমেয়েরা তাই ল্যাম্প পোস্টের আলোতে পড়ে। ত্রিপলের ঘরে আছি। সরকারি ঘর পাইনি।”

[আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল শেষ প্রতিরোধ! ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ঢুকল রুশ বাহিনী]

সপ্তম শ্রেণির ছাত্র সমীর সহিশের কথায়,”বাড়িতে আলো নেই। তাই আমি, বোন রাতে ল্যাম্প পোস্টের নিচে পড়াশোনা করি। বড় হয়ে চাকরি করব।বাবা,মায়ের পাশে থাকব।” গ্রামের লাজুক ছোট্ট এই ছেলের ছোট্ট একটা কথাই বলে দিচ্ছে, তার লেখাপড়ার অদম্য ইচ্ছের কথা। মনে করাচ্ছে পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কথা। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়শী দাশগুপ্ত বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার