সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরভোটের আগে রাজ্যের শাসকদলের অন্দরে একাধিক বিষয় নিয়ে চাপানউতোর চলছে। তারই মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করে দলীয় কর্মীদের একাংশকে সতর্কবার্তা দিলেন তৃণমূলের (TMC)যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য (Debangshu Bhattacharya)। বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক পোস্টে (Facebook post)একসঙ্গে একাধিক ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। দেবাংশুর স্পষ্ট অভিযোগ, ব্যক্তিগত স্বার্থে কিছু মানুষ ভোটে অশান্তি করেন। এ প্রসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, প্রয়োজনে বিধানসভার চেয়ে দ্বিগুণ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হোক। এও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৮’র পুনরাবৃত্তি হলে ২০১৯-এরও হবে। দলের মুখে কালি লাগতে দেবেন না – এই আবেদনও জানিয়েছেন দেবাংশু। আপাতত রাজনৈতিক মহলে দেবাংশুর সেই পোস্ট নিয়ে চলছে জোর চর্চা।
রাজ্যের শাসকদলের যুব নেতৃত্বের অন্যতম মুখ দেবাংশু ভট্টাচার্য। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য দেবাংশু। রাজ্যে তো বটেই, দেবাংশুর মতো তরুণ প্রজন্মের এক দক্ষ নেতাকে ত্রিপুরায় (Tripura) সংগঠনের দায়িত্বও দিয়েছে তৃণমূল। তুখড় বাগ্মিতা, লড়াকু মনোভাব নিয়ে সেই দায়িত্ব বেশ ভালভাবেই পালন করছেন দেবাংশু। নিজেকে সর্বদা দলের একনিষ্ঠ, সাধারণ কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন তিনি। আর সেই কারণেই সম্ভবত দল নিয়ে তাঁর এত মাথাব্যথা। পুরসভা ভোটের আগে সতর্ক করতে তাই হয়ত এত তৎপরতা তাঁর।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় নাশকতার ছক, বাংলাদেশি জঙ্গিকে ৭ বছর কারাবাসের নির্দেশ NIA আদালতের]
বৃহস্পতিবারের ফেসবুক পোস্টে দেবাংশুর বক্তব্য, ”ব্যক্তিগত স্বার্থে কিছু মানুষ ভোটে অশান্তি করেন। তাই লোকাল বডির ভোট গুলোতে অশান্তি বেশি হয়। পুলিশকে ১০০% “ফ্রি হ্যান্ড” দিতে হবে। প্রয়োজনে বিধানসভার দ্বিগুণ সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হোক…আরেকবার “২০১৮” হলে আরেকটা “২০১৯” কিন্তু সময়ের অপেক্ষা.. বারবার সবটা “২০২১” এর মতন হবে না। আর হাত জোড়া করে বাড়ি বাড়ি ঘুরলেও কিন্তু মানুষ ক্ষমা করবেন না। যারা অশান্তি করেন, ভবিষ্যতে তারা অনায়াসে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সেটিং করে নিতে পারবেন। তখন মার খেতে হবে কর্মীদের.. মরতে হবে সাধারণ সদস্যদের। কিছু স্বার্থান্বেষী বদমায়েশের জন্য দলের মুখে কালি লাগতে দেবেন না, একজন অতি সাধারণ কর্মী হিসেবে অনুরোধ রইল।”
[আরও পড়ুন: সাবধান! ভুয়ো ই-ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট খু্লতে সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে OTP কিনছে জালিয়াতরা]
পোস্টটির প্রতিটি লাইনেই গূঢ় বার্তা। কিন্তু ঠিক কাকে উদ্দেশ্য করে দেবাংশু এত কিছু বললেন, তা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে জোর গুঞ্জন। বিশেষত পোস্টের শেষের অংশ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ‘অশান্তি বাঁধানোর পর ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সেটিং’ এবং ‘স্বার্থান্বেষী বদমায়েশ’ – এসব শব্দবন্ধ ব্যবহার করে বেশ কড়া বার্তাই দিয়েছেন তৃণমূলের যুব সাধারণ সম্পাদক। পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর পক্ষে যে মত প্রকাশ করেছেন তিনি, তা দলীয় লাইনের বাইরেই। ফলে সবমিলিয়ে দেবাংশুর সাম্প্রতিকতম পোস্ট ঘিরে একাধিক সমালোচনার অবকাশ থাকছেই।