সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আফগানিস্তানে তালিবানের প্রত্যাবর্তনের মধ্যেই মঙ্গলবার পাকিস্তানের (Pakistan) লাহোরে (Lahore) ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শিখ রাজা মহারাজা রঞ্জিত সিং-এর (Maharaja Ranjit Singh) মূর্তি। ২০১৯ সালে স্থাপিত হওয়া এই মূর্তিটি এর আগেও আক্রান্ত হয়েছে। বুধবার পেশোয়ারের (Peshawar) শিখ সম্প্রদায় (Sikh community) কাঠগড়ায় তুলল পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশকে। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তারা দাবি করল, যদি পাঞ্জাবের প্রশাসন এই মূর্তিটি রক্ষা করতে না পারে তাহলে তারা সেটি পেশোয়ারে নিয়ে আসতে ইচ্ছুক।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারের ওই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, দু’জন উগ্রপন্থী আঘাত করে করে ভেঙে ফেলছে মূর্তিটি। ভাঙার পর রীতিমতো উল্লাস করতেও দেখা যাচ্ছে তাদের। জানা যাচ্ছে, তেহরিক-ই-লাবাইক পাকিস্তান বা টিএলপি নামক উগ্রপন্থী সংগঠনের সদস্যদের হাতেই আরও একবার ধ্বংস হল মহারাজ রঞ্জিত সিংয়ের মূর্তি। পরে অবশ্য গ্রেপ্তার হয় অভিযুক্ত দুজন। এই প্রথম নয়, এর আগেও ২০১৯ সালের আগস্টেই রঞ্জিৎ সিংয়ের মূর্তি ভেঙে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: Taliban Terror: তালিবান আছে তালিবানেই, বোরখা না পরার ‘অপরাধে’ গুলি করে খুন মহিলাকে]
এই ঘটনায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ পেশোয়ারের শিখ সংগঠন। সংগঠনের প্রধান গরপাল সিং দাবি করেছেন, তাঁরা ওই মূর্তি লাহোরে নিয়ে আসতে চান। এজন্য তাঁরা তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানীতে পৌঁছে ওই মূর্তি পেশোয়ারে নিয়ে আসবেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, পেশোয়ারের ঐতিহাসিক বালাহিসার দুর্গে রঞ্জিৎ সিংয়ের একটি ছবি রয়েছে। গত ৬ বছর ধরে সেই ছবিটি ওখানে থাকলেও কখনও তা কোনও দুষ্কৃতীর পাল্লায় পড়েনি।
প্রসঙ্গত, শিখ রাজা রঞ্জিত সিং-এর প্রায় চল্লিশ বছরের শাসনকাল আজও মনে রেখেছে ইতিহাস। ধর্ম, সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি যেভাবে সকলের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা উদাহরণ হয়ে আছে পৃথিবীর সামনে। কোনওরকম ধর্মীয় গোঁড়ামি ও সামাজিক অসাম্যকে তিনি জায়গা দেননি। সেই মহারাজার মূর্তি বারবার ভেঙে দেওয়া আসলে সমানাধিকারের উপরই আঘাতের সমান বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।